islamkingdomfacebook islamkingdomtwitte islamkingdomyoutube


তাকদীরের ভালো-মন্দের উপর ঈমান


18892
পাঠ সংক্ষেপ
তাকদীরের উপর ঈমান বা বিশ্বাস করা ব্যতিত এ পৃথিবীতে কোন বান্দা শান্তি পেতে পারেনা। আর সে ঈমান হলো এ বিশ্বাস রাখা যে,আল্লাহ যা চান তা-ই হয়,আর তিনি যা চাননা তা হয়না। পৃথিবীর সমগ্র মানুষ যদি কারো কোন ক্ষতি করতে চায়,তাহলে তারা ততটুকু ক্ষতিই করতে পারবে যতটুকু তার ভাগ্যে লেখা আছে। আর যদি সবাই মিলে তার কোন উপকার করতে চায় তাহলে ততটুকুই করতে পারবে যতটুকু তার ভাগ্যে আছে। খুতবায় বিষয়টি সুন্দরভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। আশা করি পাঠক মাত্রই এর দ্বারা উপকৃত হবে।

الْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِيْ خَلَقَ فَسَوَّى وَالَّذِيْ قَدَّر فَهَدَى، أَشْهَدُ أَن لَّا إِلَهَ إِلَّا اللهُ وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّداً عَبْدُهُ وَرَسُوْلُهُ، أَمَّا بَعْدُ:

মুসল্লিয়ানে কিরাম! আজ আমি আপনাদের সামনে ঈমানের সাথে সংশ্লিষ্ট এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করব যার অস্বীকারকারীর কোনো আমলই আল্লাহ তাআলা কবুল করেন না। তা হলো, ঈমান বিল কদর বা তাকদীরের উপর ঈমান। এটা ঈমানের রুকনসমূহের একটি অন্যতম রুকন। এর দ্বারা মুমিনের হৃদয়ে প্রশান্তি আসে এবং অনেক প্রশ্নের উত্তর মিলে। তাকদীর একটি ব্যাপক বিষয়। গোটা মহাবিশ্বই তাকদীরের বলয়ে ঘূর্ণয়ণমান। রাব্বুল আলামীন সবকিছুকেই সৃষ্টি করেছেন সুনির্দিষ্ট ও পরিমিতরূপে। আল কুরআনে ইরশাদ হয়েছে:

{إِنَّا كُلَّ شَيْءٍ خَلَقْنَاهُ بِقَدَرٍ}

আমি প্রতিটি বস্তুকে পরিমিতরূপে সৃষ্টি করেছি (সূরা কামার: ৪৯)

অন্যত্র ইরশাদ হয়েছে:

{سَبِّحِ اسْمَ رَبِّكَ الْأَعْلَى. الَّذِي خَلَقَ فَسَوَّى. وَالَّذِي قَدَّرَ فَهَدَى.}

আপনি আপনার মহান পালনকর্তার নামের পবিত্রতা বর্ণনা করুন, যিনি সৃষ্টি করেছেন ও সুবিন্যস্ত করেছেন। এবং যিনি সুপরিমিত করেছেন ও পথ প্রদর্শন করেছেন (সূরা আলা: ১-৩)

আরো ইরশাদ হয়েছে :

{تَبَارَكَ الَّذِي نَزَّلَ الْفُرْقَانَ عَلَى عَبْدِهِ لِيَكُونَ لِلْعَالَمِينَ نَذِيرًا . الَّذِي لَهُ مُلْكُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ وَلَمْ يَتَّخِذْ وَلَدًا وَلَمْ يَكُنْ لَهُ شَرِيكٌ فِي الْمُلْكِ وَخَلَقَ كُلَّ شَيْءٍ فَقَدَّرَهُ تَقْدِيرًا .}

পরম কল্যাণময় তিনি যিনি তাঁর বান্দার প্রতি ফয়সালার কিতাব অবতীর্ণ করেছেন, যাতে সে বিশ্বজগতের জন্য সতর্ককারী হয়। তিনি হলেন সে সত্তা যার রয়েছে নভোমণ্ডল ও ভূমণ্ডলের রাজত্ব। তিনি কোনো সন্তান গ্রহণ করেননি। রাজত্বে তার কোনো অংশীদার নেই। তিনি প্রত্যেক বস্তু সৃষ্টি করেছেন, অতঃপর তাকে শোধিত করেছেন পরিমিতভাবে (সূরা ফুরকান: ১-২)

এ বিষয়ে আরো অনেক আয়াত আছে। আছে সহীহ হাদীসও। যেমন একটি হাদীসে আছে, একদা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাহাবায়ে কেরামের মাঝে উপস্থিত ছিলেন। এমন সময় দীন সম্পর্কে প্রশ্ন করার জন্য মানবাকৃতি ধারণ করে জিবরীল আ. আগমন করলেন। তারপর কয়েকটি প্রশ্ন করলেন। তিনি যেসব প্রশ্ন করেছিলেন, তন্মধ্যে একটি প্রশ্ন ছিল এই: আপনি আমাকে ঈমান সম্পর্কে অবহিত করুন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন:

الْإِيْمَانُ أَنْ تُؤْمِنَ بِاللَّهِ وَمَلَائِكَتِهِ وَكُتُبِهِ وَرُسُلِهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ وَبِالْقَدَرِ خَيْرِهِ وَشَرِّهِ، قَالَ جِبْرِيْلُ: صَدَقْتَ

ঈমান হলো, আল্লাহ তাআলা, সমস্ত ফেরেশতা, আসমানী কিতাবসমূহ, সকল নবী-রাসূল, কিয়ামত দিবস এবং তাকদীরের ভালো-মন্দের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করা। জিবরীল আ. বললেন, আপনি সত্য বলেছেন।

এ হাদীসের শেষ দিকে আছে তোমরা কি জানো প্রশ্নকারী লোকটি কে? সাহাবীগণ বললেন, না, আমরা জানি না, হে আল্লাহর রাসূল, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, তিনি হলেন জিবরীল। তিনি তোমাদেরকে দীন শেখাতে এসেছিলেন (মুসলিম)।

এতে বুঝা গেল যে, এই রুকনগুলোসহ আরো যেসব বিষয় এ হাদীসে বর্ণিত হয়েছে সেগুলো সম্পর্কে অবগতি লাভ করা দীনের অন্তর্ভুক্ত।

প্রিয় মুসলিম ভাইয়েরা! কোনো জিনিস অস্তিত্বে আসার আগেই আল্লাহ তাআলার সে সম্পর্কে জ্ঞাত হওয়া এবং ঐ জিনিসটি কিরূপে অস্তিত্ব লাভ করবে তা বিস্তারিত লিখে রাখার নাম তাকদীর। আর তাকদীর সংক্রান্ত একাজটি সম্পন্ন হয়েছে আসমান ও যমীন সৃষ্টির পঞ্চাশ হাজার বছর পূর্বেই।

তাকদীদের উপর ঈমান আনার ক্ষেত্রে একথাটিও মনে রাখতে হবে যে, সমস্ত সৃষ্টি আল্লাহ তাআলার অধীনে এবং এগুলোর ক্ষেত্রে কেবল তাঁর ইচ্ছাই কার্যকরী হয়। সে হিসেবে তাকদীরে বিশ্বাসের অর্থ হবে: যেকোনো বিষয় সংঘটিত হওয়ার পূর্বে আল্লাহর চিরন্তন ইলমে তা রয়েছে, এ কথার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করা। এও বিশ্বাস করা যে, এ মহাবিশ্বে এমন কোনো কিছুর অস্তিত্ব নেই, যা আল্লাহ তাআলার চিরন্তন ইলমের সীমার বাইরে ঘটছে। আল্লাহ তাআলা চেয়েছেন ও জেনেছেন, অতঃপর তাঁর চাওয়া ও জানা অনুযায়ী সকলকিছু ঘটছে এবং ঘটবে।

তাকদীরে বিশ্বাস করার মধ্যে একথাও রয়েছে যে, আল্লাহ তাআলা সৃষ্টিকুলের ভাগ্য, আকাশ ও পৃথিবী সৃষ্টির পঞ্চাশ হাজার বছর পূর্বেই লাওহে মাহফুযে লিখে রেখেছেন। সহীহ হাদীসে এ রকমই রয়েছে। আল কুরআনেও এ দিকে ইঙ্গিত করে বলা হয়েছে:

{إِنَّ ذَلِكَ فِي كِتَابٍ إِنَّ ذَلِكَ عَلَى اللَّهِ يَسِيرٌ}

নিশ্চয় তা কিতাবে, আর তা আল্লাহর জন্য অতি সহজ (সূরা আল হজ: ৭০)

তাকদীরে বিশ্বাসের মধ্যে এ বিষয়টাও রয়েছে যে, আল্লাহ তাআলা যা চেয়েছেন তা হয়েছে। আর যা চননি, তা হয়নি। এ পৃথিবীর সমগ্র মানুষ যদি একত্রিত হয়ে, আল্লাহ যা চাননি তা সংঘটিত করতে চায়, তবে তারা তা পারবে না। বরং কেবল তাই সংঘটিত হবে যা আল্লাহ চান, যা তিনি ইচ্ছা করেন। বান্দার ইচ্ছা আল্লাহর ইচ্ছার আওতাধীন। ইরশাদ হয়েছে :

{وَمَا تَشَاءُونَ إِلَّا أَنْ يَشَاءَ اللَّهُ إِنَّ اللَّهَ كَانَ عَلِيمًا حَكِيمًا ، يُدْخِلُ مَنْ يَشَاءُ فِي رَحْمَتِهِ}

আল্লাহর ইচ্ছা ব্যতিরেকে তোমরা অন্য কোনো অভিপ্রায় পোষণ করবে না। আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়। তিনি যাকে ইচ্ছা তার রহমতে দাখিল করেন (সূরা দাহর: ৩০-৩১)

প্রিয় শ্রোতামণ্ডলী! ইসলামে আকীদায়ে জবর অর্থাৎ মানুষ যা করছে আল্লাহ তাআলা তা করতে বাধ্য করেন, এ জাতীয় কোনো আকীদার স্থান নেই। প্রকাশ্যভাবে নেই, অপ্রকাশ্যভাবেও নেই। বরং ইসলামী শরীয়ত ও আকীদা অনুযায়ী মানুষ স্বাধীন। মানুষ তার স্বাধীন ইচ্ছায় ভালো ও মন্দের মধ্যে যেকোনো একটি বেছে নেয়। যেকোনো একটি পথ বেছে নেয়। আল্লাহ তাআলা ভালো ও মন্দ উভয় পথই পরিষ্কার করে বাতলে দিয়েছেন, দেখিয়ে দিয়েছেন। যেমন ইরশাদ হয়েছে:

{ وَهَدَيْنَاهُ النَّجْدَيْنِ }

আমি তাকে দুটি পথ প্রদর্শন করেছি (সূরা বালাদ: ১০)।

অন্যত্র ইরশাদ হয়েছে:

{قَدْ أَفْلَحَ مَنْ زَكَّاهَا. وَقَدْ خَابَ مَنْ دَسَّاهَا .}

যে নিজেকে পরিশুদ্ধ করল সে সফল হলো। আর যে নিজেকে কলুষিত করল সে ব্যর্থ হলো (সূরা শামস: ৯-১০)

কোনো কিছু সম্পর্কে আল্লাহ তাআলার পূর্ব-অবগতি এবং পূর্ব থেকে লিখে রাখা কোনো অর্থেই বান্দাকে বাধ্য করা নয়। বরং এর অর্থ হলো কোনো কিছু হওয়া সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা আগে থেকেই জানেন এবং তা হবে বলেই তিনি তা লিখে রেখেছেন। বরং তা বান্দার উপর হুজ্জত বা প্রমাণ প্রতিষ্ঠার জন্য এবং এ জন্য যে, আল্লাহ তাআলার সুপরিব্যাপ্ত ইলমের বাইরে কোনো কিছুই ঘটেনা, কখনো ঘটবেও না।

বেরাদারানে ইসলাম! আমাদের সমাজে এমন একটি দল আছে যারা গুনাহ করার পর তকদীর দ্বারা দলীল দিয়ে থাকে। নিজের পাপের জন্য তাকদীরকে অজুহাত হিসেবে দাঁড় করায়। অর্থাৎ তারা মনে করে যে, কোনো গুনাহের কর্ম তাকদীরে লিপিবদ্ধ আছে বলেই তা সংঘটিত হয়। ফলে তারা যা ইচ্ছে তাই করে। পরে যখন তাদেরকে শাস্তি দেওয়া হয় কিংবা তিরস্কার করা হয় তখন বলে, এটা তাকদীরের ফয়সালা।

তাদের এ ধারণা ঠিক নয়। তবে হ্যাঁ, সবকিছুই আল্লাহর চিরন্তন ইলম ও ফয়সালা অনুযায়ী হয়ে থাকে। কিন্তু গুনাহের কাজ করে তাকদীরকে অজুহাত হিসাবে পেশ করা কখনো উচিত নয়, এটা সুস্পষ্ট গোমরাহী। কারণ :

১. তাদের প্রত্যেকেই হয়তো তাকদীরকে বান্দার জন্য হুজ্জত বা দলীল মনে করে অথবা করে না। তাকদীর যদি বান্দার জন্য হুজ্জত হয় তবে তা সমস্ত মানুষের জন্য হুজ্জত হবে। কারণ তারা সকলেই তাকদীরের মধ্যে শরীক। এমতাবস্থায় এমন কাউকে কোনো প্রকার বাধা দেওয়া যাবে না, যে কারো উপর অত্যাচার করছে, কাউকে গালি দিচ্ছে, কারো সম্পদ লুণ্ঠন করছে, কারো চৌহদ্দীকে নষ্ট করছে, মারামারি করছে এবং কারো সন্তান-সন্ততি বা সম্পদ ধ্বংস করছে।

এ দলের লোকেরা সবাই মিথ্যুক। কারণ তাদের প্রত্যেকেই উপরে বর্ণিত কাজগুলোকে নিন্দা ও অপছন্দ করে এবং এগুলোর বিরোধিতা করে। এই নিন্দা ও বিরোধিতার ক্ষেত্রে কেউ তাদের বাধা দিলে তারা রাগ- গোসসায় ফেটে পড়ে এবং তাকে প্রতিহত করার চেষ্টা করে। হারামকর্ম সম্পাদনকারীর জন্য তাকদীর যদি প্রমাণ হতো তাহলে তাকে নিন্দা না করার প্রয়োজন ছিল। কারো ব্যাপারে বলা যেতো না যে, সে জালেম সে যাই করুক না কেন, যত অন্যায়ই করুক না কেন! আর এরূপ করা কারো পক্ষেই সম্ভব নয়। কেননা মানুষ যদি এরূপ করা শুরু করে তাহলে বিশ্বজগত ধ্বংস হয়ে যাবে। সুতরাং প্রমাণিত হলো, এ দলের বক্তব্য যুক্তি ও শরীয়ত উভয় দৃষ্টিতেই কুফরী। এবং তারা তাদের এ কথায় মিথ্যুক ও প্রতারক যে, তাকদীর বান্দার জন্য হুজ্জত।

২. তাকদীর যদি বান্দার জন্য হুজ্জত হতো তাহলে তো এটা আবশ্যক হতো যে, ইবলীস, ফিরআউন, কওমে নুহ ও কওমে আদসহ যাদেরকে আল্লাহ তাআলা তাদের গুনাহের কারণে ধ্বংস করেছেন তারা সবাই মাযুর বা অপারগ বলে সাব্যস্ত হবে। অথচ তাদেরকে মাযুর মনে করা এমন কুফরী যার ব্যাপারে সকল মিল্লাতের অনুসারীই একমত।

৩. যদি তাকদীর বান্দার জন্য হুজ্জত হতো তাহলে তো এটাও আবশ্যক হতো যে, আল্লাহর ওলী ও দুশমন, মুমিন ও কাফির, জান্নাতী ও জাহান্নামীর মাঝে কোনো ব্যবধান থাকবে না। অথচ আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন:

{وَمَا يَسْتَوِي الأعْمَى وَالْبَصِيرُ. وَلاَ الظُّلُمَاتُ وَلاَ النُّورُ. وَلاَ الظِّلُّ وَلاَ الْحَرُورُ. وَمَا يَسْتَوِي الأحْيَاءُ وَلا الأمْوَاتُ}

দৃষ্টিমান ও দৃষ্টিহীন সমান নয়। সমান নয় অন্ধকার ও আলো। সমান নয় ছায়া ও তপ্তরোদ। আরও সমান নয় জীবিত ও মৃত (সূরা ফাতির: ১৯-২২)

তিনি আরো বলেন:

{أَمْ حَسِبَ الَّذِينَ اجْتَرَحُوا السَّيِّئَاتِ أَنْ نَجْعَلَهُمْ كَالَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ سَوَاءً مَحْيَاهُمْ وَمَمَاتُهُمْ سَاءَ مَا يَحْكُمُونَ}

যারা দুষ্কর্ম করেছে তারা কি মনে করে যে, জীবন ও মৃত্যুর ক্ষেত্রে আমি তাদেরকে এ সব লোকের সমান গণ্য করব, যারা ঈমান আনে এবং সৎকর্ম করে? তাদের বিচার কতইনা মন্দ! (সূরা আল-জাছিয়া২৯)

এর দ্বারা বুঝা গেল, কেউ যদি নাফরমানী করে, পাপ ও অন্যায় করে এবং তার পাপ ও অন্যায়কে বৈধতাদানের জন্য তাকদীরের দলীল পেশ করে তবে তা হবে মারাত্মক অপরাধ।

৪. আমরা তাকদীরে বিশ্বাস করি তবে দলীল হিসেবে পেশ করি না। সুতরাং যে ব্যক্তি তাকদীর দ্বারা দলীল পেশ করে তার দলীল বাতিল ও অগ্রহণযোগ্য। অনুরূপভাবে যে ব্যক্তি তাকদীরের কথা উল্লেখ করে ওজর পেশ করে তার ওজরও গ্রহণযোগ্য নয়।

যদি তাকদীর দ্বারা দলীল পেশ করা গ্রহণযোগ্য হতো তাহলে ইবলীস এবং অন্যদের থেকেও তা গ্রহণ করা হতো। তাকদীর যদি বান্দাদের জন্য হুজ্জত হতো তাহলে কোনো মাখলুককে শাস্তি দেওয়া হতো না। দুনিয়াতেও না, আখেরাতেও না। এমনিভাবে চোরের হাত কাটা এবং হত্যাকারীকে হত্যার পরিবর্তে হত্যা করাও হতো না। কোনো অপরাধীর উপর হদ্ বা শরীয়ত কর্তৃক নির্ধারিত শাস্তি প্রয়োগ করা হতো না। আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করা হতো না এবং সৎকাজের আদেশ ও অসৎকাজের নিষেধও করা হতো না।

৫. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে এ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বললেন, তোমাদের প্রত্যেকের ঠিকানা জান্নাতে অথবা জাহান্নামে লিখা হয়ে গেছে। তখন তাঁকে বলা হলো, ইয়া রাসূলাল্লাহ! তবে কি আমরা আমল বর্জন করব না এবং আমাদের কিতাবের উপর ভরসা করব না?

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উত্তরে বললেন না, আমল করতে থাকো। আর প্রত্যেকের জন্য ঐ আমল করা সহজ হবে যার জন্য তাকে সৃষ্টি করা হয়েছে (বুখারী ও মুসলিম)।

অন্য এক হাদীসে আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জিজ্ঞেস করা হলো, হে আল্লাহর রাসূল! মানুষ যে আমল করে এবং কষ্ট স্বীকার করে সে ব্যাপারে আপনার কী অভিমত? এ ব্যাপারে কি কলম শুকিয়ে গেছে এবং আমলনামা গুটিয়ে ফেলা হয়েছে? নাকি তারা যা করছে নতুনভাবে করছে?

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জবাবে বললেন, এ ব্যাপারে কলম শুকিয়ে গেছে এবং আমলনামা গুটিয়ে ফেলা হয়েছে। জিজ্ঞেস করা হলো, তাহলে আমল করে লাভ কি?

জবাবে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, আমল করতে থাকো। আর প্রত্যেকের জন্য ঐ আমল করা সহজ হবে যার জন্য তাকে সৃষ্টি করা হয়েছে (বুখারী)।

৬. আল্লাহ তাআলা সবকিছু জানেন এবং তিনি যা জানেন তাই লিখে রেখেছেন। যেমন আল্লাহ তাআলা লিখে রেখেছেন যে, অমুক ব্যক্তি ঈমান আনবে এবং নেক-কাজ করবে। ফলে সে জান্নাতে যাবে। আবার আরেক ব্যক্তি সম্পর্কে লিখে রেখেছেন যে, সে গুনাহের কাজ করবে এবং জাহান্নামে যাবে। অনুরূপভাবে আল্লাহ তাআলা জানেন বলে লিপিবদ্ধ করেছেন যে, অমুক ব্যক্তি একটি মেয়েকে বিয়ে করবে এবং তার সাথে সহবাস করবে। ফলে তার সন্তান হবে এবং আরেক ব্যক্তি সম্পর্কে লিপিবদ্ধ করেছেন যে, সে আহার করবে এবং তৃপ্ত হবে। এমতাবস্থায় কেউ যদি একথা বলে যে, আমি যদি জান্নাতী হই তবে তো আমার আমলের কোনো প্রয়োজন নেই, আমল ছাড়াই আমি জান্নাতে যেতে পারব তাহলে তার একথা বাতিল বলে সাব্যস্ত হবে। কেননা সে জানে যে, সে তার নেক-আমল দ্বারা জান্নাতে যাবে। এখন যদি সে আমল ছাড়া জান্নাতে দাখেল হয় তাহলে তা আল্লাহ তাআলা যা জানেন এবং তিনি যা ফয়সালা করে রেখেছেন তার বিরোধী হবে।

بَارَكَ اللهُ لِيْ وَلَكُمْ فِي الْقُرْآن الْعَظِيْمِ وَنَفَعَنِيْ وَإِيَّاكُمْ بِمَا فِيْهِ مِنَ الْآياتِ وَالذِّكْر الحْكِيْم، أقُوْلُ قَوْلِيْ هَذَا وَأَسْتَغْفِرُ اللهَ لِيْ وَلَكُمْ فَاسْتَغْفِرُوهُ إِنَّهُ هُو الْغَفُور الرَّحِيْمْ .

الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِيْنَ، خَلَقَ الْإِنْسَانَ وَكَرَّمَهِ وَهَدَاهُ النَّجْدَيْنِ، أَشْهَدُ أَن لَّا إِلهَ إِلَّا اللهُ وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّداً عَبْدُهُ وَرَسُوْلُهُ، أَمَّا بَعْدُ :

প্রিয় মুসল্লিায়ানে কেরাম! তাকদীরের প্রতি ঈমানের কতিপয় ফল হলো নিম্নরূপ:

এক. আল্লাহর উপর সত্যিকার অর্থে নির্ভরতা সৃষ্টি হওয়া যে, বান্দার জীবনে যাকিছু ঘটেছে, তা না হয়ে পারত না। মহান আল্লাহ তাআলা আল কুরআনে ইরশাদ করেন:

{مَا أَصَابَ مِنْ مُصِيبَةٍ إِلَّا بِإِذْنِ اللَّهِ وَمَنْ يُؤْمِنْ بِاللَّهِ يَهْدِ قَلْبَهُ وَاللَّهُ بِكُلِّ شَيْءٍ عَلِيمٌ}

আল্লাহ্র নির্দেশ ব্যতিরেকে কোন বিপদ আসে না এবং যে আল্লাহ্র প্রতি বিশ্বাস করে, তিনি তার অন্তরকে সৎপথ প্রদর্শন করেন। আল্লাহ্ সববিষয়ে সম্যক পরিজ্ঞাত (সূরা তাগাবুন, আয়াত : ১১)

তিনি আরো বলেন:

{مَا أَصَابَ مِنْ مُصِيبَةٍ فِي الْأَرْضِ وَلَا فِي أَنْفُسِكُمْ إِلَّا فِي كِتَابٍ مِنْ قَبْلِ أَنْ نَبْرَأَهَا إِنَّ ذَلِكَ عَلَى اللَّهِ يَسِيرٌ}

যমীনে এবং তোমাদের নিজদের মধ্যে এমন কোন মুসীবত আপতিত হয় না, যা আমি সংঘটিত করার পূর্বে কিতাবে লিপিবদ্ধ রাখি না। (সূরা হাদীদ: ২২)

দুই: হৃদয় তৃপ্ত, শান্ত ও সুস্থির থাকা। নাফসের বড়াই থেকে মুক্ত থাকা। ইরশাদ হয়েছে :

{الَّذِينَ آمَنُوا وَتَطْمَئِنُّ قُلُوبُهُمْ بِذِكْرِ اللَّهِ أَلَا بِذِكْرِ اللَّهِ تَطْمَئِنُّ الْقُلُوبُ}

যারা বিশ্বাস স্থাপন করে তাদের অন্তর আল্লাহর জিকির দ্বারা শান্তি লাভ করে। জেনে রেখো, আল্লাহর জিকির দ্বারা অন্তরসমূহ শান্তি পায় (সূরা রাদ: ২৮)

হাদীস শরীফে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন :

(اعْلَمْ أَنَّ الْأُمَّةَ لَوْ اجْتَمَعُوْا عَلَى أَن يَّضُرُّوْكَ بِشَيْءٍ لَمْ يَضُرُّوْكَ إِلَّا بِشَيْءٍ قَدْ كَتَبَهُ اللهُ عَلَيْكَ، وَلَوْ اجْتَمَعُوْا عَلَى أَنْ يَنْفَعُوْكَ بِشَيْءٍ لَمْ يَنْفَعُوْكَ إِلَّا بِشَيْءٍ قَدْ كَتَبَهُ اللهُ لَكَ.)

জেনে রেখো, গোটা জাতি মিলে যদি তোমার কোনো ক্ষতি করার চেষ্টা করে তাহলে তারা তোমার কোনো ক্ষতি করতে পারবে না, তবে ততটুকু পারবে, যতটুকু আল্লাহ তাআলা তোমার ভাগ্যে লিখে রেখেছেন। অনুরূপভাবে গোটা জাতি মিলে যদি তোমার কোনো উপকার করার চেষ্টা করে তাহলে তারা তোমার কোনো উপকার করতে পারবে না, তবে ততটুকু পারবে, যতটুকু আল্লাহ তাআলা তোমার ভাগ্যে লিখে রেখেছেন (তিরমিযী, আলবানী হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন)।

হাদিসে আরো উল্লেখিত হয়েছে:

(وعَنْ أَبِى هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ الْمُؤْمِنُ الْقَوِىُّ خَيْرٌ وَأَحَبُّ إِلَى اللَّهِ مِنَ الْمُؤْمِنِ الضَّعِيفِ، وَفِى كُلٍّ خَيْرٌ، احْرِصْ عَلَى مَا يَنْفَعُكَ وَاسْتَعِنْ بِاللَّهِ، وَلاَ تَعْجَزْ، وَإِنْ أَصَابَكَ شَىْءٌ فَلاَ تَقُلْ لَوْ أَنِّى فَعَلْتُ كَانَ كَذَا وَكَذَا، وَلَكِنْ قُلْ قَدَّرَ اللَّهُ وَمَا شَاءَ فَعَلَ فَإِنَّ لَوْ تَفْتَحُ عَمَلَ الشَّيْطَانِ)

আবূ হুরাইরা রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: আল্লাহ তাআলার কাছে শক্তিশালী মুমিন দুর্বল মুমিনের চেয়ে অধিক উত্তম ও প্রিয়। তবে উভয় প্রকার মুমিনের মধ্যে কল্যাণ রয়েছে। তোমার জন্য যা উপকারী-কল্যাণকর তার প্রতিই আগ্রহী হও, আর আল্লাহর সাহায্য প্রার্থনা করো। অপারগ হয়ো না। যদি তোমার উপর কোনো মুসীবত আসে তাহলে একথা বলো না যে, যদি আমি এমনটি করতাম তাহলে এরূপ হতো না। বরং বলো, এটা আমার তাকদীরের লিখন। আল্লাহ তাআলা যেমন চেয়েছেন তেমন করেছেন। কেননা যদি শব্দটি শয়তানকে কাজ করার পথ খুলে দেয় (মুসলিম)।

মুমিন ভাগ্যের প্রতি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে, তবে কখনো আমল করা ছেড়ে দেয় না। হাদীসে এসেছে:

আলী রাযি. থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কোনো এক জানাযায় উপস্থিত ছিলেন। এমন সময় এক পর্যায়ে তিনি মাটিতে দাগ কেটে বললেন, তোমাদের প্রত্যেকের ঠিকানাই জান্নাতে এবং জাহান্নামে লিখা হয়ে গেছে।

সাহাবায়ে কেরাম বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! তবে কি আমরা আমাদের তকদীর তথা ভাগ্যের লিখনের উপর ভরসা করে বসে থাকব এবং আমল করা ছেড়ে দিব?

জবাবে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, তোমরা আমল করতে থাকো। তোমাদের প্রত্যেকের জন্য ঐ আমল করা সহজ হবে যার জন্য তাকে সৃষ্টি করা হয়েছে। সুতরাং যে ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করার সৌভাগ্য লাভ করবে তার জন্য নেক-আমল করা সহজ করে দেওয়া হবে। আর যে হতভাগা জাহান্নামে প্রবেশ করবে তার জন্য বদ-আমল সহজ করে দেওয়া হবে। অতঃপর তিনি পাঠ করলেন, (অর্থ) অতএব যে দান করে এবং খোদাভীরু হয় এবং উত্তম বিষয়কে সত্য বলে গ্রহণ করে, আমি তার জন্য সুগম করে দেই সহজ পথ। (সূরা লাইল: ৫-৬) {বুখারী, মুসলিম}

বেরাদারানে মিল্লাত! জেনে রাখুন, তাকদীরকে কেন্দ্র করে দুটি দল পথভ্রষ্ট হয়ে গেছে। তন্মধ্যে একটি হলো, কাদরিয়া। এই ভ্রান্ত দলটি তাকদীরকে স্বীকারই করে না। তারা বলে :

إِنَّ الْأَمْرَ أُنُفٌ

তাকদীর বলতে কিছুই নেই, সব কিছু নতুনভাবে ঘটে।

তকদীরকে কেন্দ্র করে পথভ্রষ্ট হওয়া দ্বিতীয় দলটি হলো, জাবরিয়া। তারা বলে, মানুষ হলো চলমান বাতাসের মাঝে পালকের ন্যায়। অর্থাৎ বাতাস যেমন পালককে যখন যেদিকে খুশি সেদিকে উড়িয়ে নিয়ে যায়, পালকের কিছুই করার থাকে না, মানুষও ঠিক তদ্রুপ। সে তার তাকদীরের কাছে অসহায়। তার ব্যাপারে তাকদীরে যেভাবে যা লিখা আছে সেভাবে তা করতেই সে বাধ্য। তার নিজের পক্ষ থেকে কিছুই করণীয় নেই।

এই উভয় দলই স্পষ্ট গোমরাহীর মধ্যে রয়েছে। কেননা আল্লাহ তাআলা সবকিছু নিরূপণ করেছেন, তিনি যা জানেন তা লিখে রেখেছেন এবং তিনি যা চান তাই হয়, যা প্রমাণসহ পূর্বে আলোচনা করা হয়েছে। উপরন্তু তিনি মানুষের ইচ্ছাশক্তি বাতিল বা অকেজো করে রাখেননি। বরং তিনি বলেছেন:

{إِنَّا هَدَيْنَاهُ السَّبِيلَ إِمَّا شَاكِرًا وَإِمَّا كَفُورًا .}

আমি তাকে পথ দেখিয়ে দিয়েছি। এখন সে হয়তো কৃতজ্ঞ হবে নয়তো হবে অকৃতজ্ঞ (সূরা আল ইনসান: ৩)

তাকদীর যারা মানে না, অস্বীকার করে তাদের ব্যাপারে ইবনে উমার রাযি. অত্যন্ত স্পষ্টভাবে বলেছেন, কোনো ব্যক্তি যদি ওহুদ পাহাড় পরিমাণ স্বর্ণের মালিক হয় এবং সে তা আল্লাহর রাস্তায় খরচ করে তাহলে আল্লাহ তাআলা তা কবুল করবেন না যতক্ষণ না সে তাকদীরের উপর ঈমান আনবে (মুসলিম)।

তাই আপনাদের দায়িত্ব হলো, আল্লাহর উপর ভরসা করা। কেননা যে ব্যক্তি আল্লাহর উপর ভরসা করে তার জন্য আল্লাহ তাআলাই যথেষ্ট। শুধু তাই নয়, আল্লাহর উপর ভরসাকারীকে আল্লাহ তাআলা এমন জায়গা থেকে রিযক পৌঁছান যেখান থেকে রিযক আসবে বলে সে কল্পনাও করতে পারেনি। এমনিভাবে আপনাদের উপর এটাও দায়িত্ব যে, আপনারা শরীয়তসম্মত বৈধ উপকরণ অবলম্বন করবেন এবং একথা সব সময় স্মরণ রাখবেন যে, আল্লাহ তাআলা সবকিছু জানেন এবং তিনি সর্বশক্তিমান।

পরিশেষে দোআ করি, আল্লাহ তাআলা যেন আমাদেরকে তাকদীরের উপর পুরোপুরি বিশ্বাস স্থাপন করে তদনুযায়ী আমল করার তাওফীক দান করেন। আমীন।

اللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ كَمَا صَلَّيْتَ عَلَى آلِ إِبْرَاهِيْمَ إِنَّكَ حَمِيْدٌ مَجِيْدٌ وَبَارِكْ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ كَمَا بَارَكْتَ عَلَى آلِ إِبْرَاهِيْمَ إِنَّكَ حَمِيْدٌ مَجِيْدٌ.

হে আল্লাহ! আপনি আমাদেরকে তাকদীরের উপর যথার্থরূপে ঈমান আনার তাওফীক দান করুন। সঠিক অর্থে আপনার উপর তাওয়াক্কুল করার তাওফীক দান করুন। তাকদীরের ব্যাপারে যারা বিভ্রান্ত হয়েছে তাদের পথ থেকে আমাদের হিফাযত করুন। আপনি আমাদেরকে সিরাতুল মুস্তাকীমের উপর দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত রাখুন। আপনি আমাদের জন্য সকল প্রকার খায়ের ও কল্যাণের ফয়সালা করুন।

হে আল্লাহ! আপনি মুসলিম উম্মাহকে হিফাযত করুন। মুসলিম উম্মার বিরুদ্ধে সকল প্রকার ষড়যন্ত্র বানচাল করে দিন। মুসলিম শাসকদেরকে আপনার রেজামন্দী অনুযায়ী চলার তাওফীক দান করুন।

হে আল্লাহ! আপনি আমাদের বৈধ প্রয়োজনগুলো পূরণ করে দিন। আমাদেরকে দারিদ্র্য মুক্ত করুন। আমাদের মা-বোন স্ত্রী-কন্যাদেরকে পর্দা বজায় রেখে আপনার বিধান মুতাবিক চলার তাওফীক দান করুন। আমীন, ইয়া রাব্বাল আলামীন।

عِبَادَ الله! (إِنَّ اللَّهَ يَأْمُرُ بِالْعَدْلِ وَالإِحْسَانِ وَإِيتَاء ذِي الْقُرْبَى وَيَنْهَى عَنِ الْفَحْشَاء وَالْمُنكَرِ وَالْبَغْيِ يَعِظُكُمْ لَعَلَّكُمْ تَذَكَّرُونَ) فَاذْكُرُوْا اللَّهَ الْعَظِيْمَ الْجَلِيْلَ يَذْكُرْكُمْ وَاشْكُرُوْهُ عَلَى الْنِّعَمِ يَزِدْكُمْ وَلَذِكْرُ اللهِ أَكْبَرُ وَاللهُ يَعْلَمُ مَا تَصْنَعُوْنَ.