islamkingdomfacebook islamkingdomtwitte islamkingdomyoutube


পরকালীন জীবনই আসল জীবন


11034
পাঠ সংক্ষেপ
মানুষের মৃত্যুবরণ করা এক প্রাত্যহিক, বরং প্রতি মুহূর্তের ঘটনা, প্রতি মুহূর্তেই পৃথিবীর কোথাও না কোথাও মারা যাচ্ছে বহু মানুষ। এক পরিসংখ্যান অনুযায়ী প্রতি মিনিটে ১০৮ জন মানুষ মৃত্যুবরণ করছে। তবে মৃত্যুবরণ মানুষের সামগ্রিক ধ্বংস নয়। বরং মৃত্যুর দরজা দিয়ে সে পাড়ি জমাচ্ছে অনন্ত জগতে। তাই বুদ্ধিমান তো সেই যে দুনিয়ার জীবনকে পরকালের ফসল ফলানোর জন্য ব্যবহার করে। শাশ্বত ও অনন্ত জীবনের পাথেয় সংগ্রহের কাজে লাগায়।

الْحَمْدُ لِلَّهِ ذِيْ الْكَرَمِ وَالْجَلَالِ، وَالْفَضْلِ وَالنَّوَالِ ، يَعْلَمُ مَا فِيْ السَّرَائِرِ وَيَطَّلِعُ عَلَى مَا فِي الضَّمَائِرِ (عَالِمِ الْغَيْبِ وَالشَّهَادَةِ الكَبِيْرِ الْمُتَعَالِ)، أَحْمَدُهُ حَمْداً يَلِيْقُ بِكَرِيِمِ وَجْهِهِ، وَبِعَظِيْمِ سُلْطَانُهِ، وَأَشْهَدُ أَن لَّا إِلَهَ إِلَّا اللهُ، وَحْدَهُ لَا شَرِيْكَ لَهُ، وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّداً عَبْدُهُ وَرَسُوْلُهُ، وَصَفِيُّهُ وَخَلِيْلُهُ، صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَعَلَى آلِهِ وَأَصْحَابِهِ وَسَلَّمَ تَسْلِيْماً كَثِيْرَاً، أَمَّا بَعْدُ :

প্রতিটি মানুষের দুটি ঠিকানা, একটি ক্ষণস্থায়ী অপরটি চিরস্থায়ী-অনন্ত।

প্রিয় মুসলিম ভাইয়েরা! আমরা আজ পৃথিবী নামক এক গ্রহে বসবাস করছি। পৃথিবীর আলো-বাতাস, নান্দনিক দৃশ্য, খাদ্য-পানীয় ও নানাবিধ নিয়ামত আমরা প্রতিনিয়ত ভোগ করছি। তবে আমাদের এ ভোগ কেবলই সাময়িক, ক্ষণস্থায়ী। এ পৃথিবীর মায়া ছেড়ে, সকল সম্পর্ক ছিন্ন করে একদিন সবাইকে চলে যেতে হবে পরপারে, অনন্ত ঠিকানায়। যেখানে নেই কোনো মৃত্যু, নেই কোথাও পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ।

মৃত্যু এক চিরসত্য বিষয়। মহাবিশ্বে বিরাজমান সবকিছুই একদিন না একদিন ধ্বংস হয়ে যাবে। একমাত্র আল্লাহ তাআলাই চিরঞ্জীব ও অনন্ত-অসীম।

প্রিয় ভাইয়েরা! মানুষের ফানা হয়ে যাওয়া, মৃত্যুবরণ করা এক প্রাত্যহিক, বরং প্রতি মুহূর্তের ঘটনা, প্রতি মুহূর্তেই পৃথিবীর কোথাও না কোথাও মারা যাচ্ছে বহু মানুষ। এক পরিসংখ্যান অনুযায়ী প্রতি মিনিটে ১০৮ জন মানুষ মৃত্যুবরণ করছে। তবে মৃত্যুবরণ মানুষের সামগ্রিক ধ্বংস নয়। বরং মৃত্যুর দরজা দিয়ে সে পাড়ি জমাচ্ছে অনন্ত জগতে। তাই বুদ্ধিমান তো সেই যে দুনিয়ার জীবনকে পরকালের ফসল ফলানোর জন্য ব্যবহার করে। শাশ্বত ও অনন্ত জীবনের পাথেয় সংগ্রহের কাজে লাগায়।

পার্থিব জীবন খেল-তামাশা অর্থ-সম্পদ ও ছেলেসন্তান নিয়ে ফখর-বড়াইয়ের জীবন। মৃত্যুর মাধ্যমে শেষ হয়ে যাওয়ার জীবন। তাই এ ধ্বংসশীল জীবনকে প্রকৃত জীবন বলা অজ্ঞানতার পরিচায়ক। প্রকৃত জীবন হলো পরকালের জীবন। ইরশাদ হয়েছে

{اعْلَمُوا أَنَّمَا الْحَيَاةُ الدُّنْيَا لَعِبٌ وَلَهْوٌ وَزِينَةٌ وَتَفَاخُرٌ بَيْنَكُمْ وَتَكَاثُرٌ فِي الْأَمْوَالِ وَالْأَوْلَادِ كَمَثَلِ غَيْثٍ أَعْجَبَ الْكُفَّارَ نَبَاتُهُ ثُمَّ يَهِيجُ فَتَرَاهُ مُصْفَرًّا ثُمَّ يَكُونُ حُطَامًا وَفِي الْآَخِرَةِ عَذَابٌ شَدِيدٌ وَمَغْفِرَةٌ مِنَ اللَّهِ وَرِضْوَانٌ وَمَا الْحَيَاةُ الدُّنْيَا إِلَّا مَتَاعُ الْغُرُورِ.}

তোমরা জেনে রাখ যে, দুনিয়ার জীবন ক্রীড়া-কৌতুক, শোভাসৌন্দর্য, তোমাদের পারস্পরিক গর্বঅহঙ্কার এবং ধনসম্পদ ও সন্তানসন্ততিতে আধিক্যের প্রতিযোগিতা মাত্র। এর উপমা হল বৃষ্টির মত, যার উৎপন্ন ফসল কৃষকদেরকে আনন্দ দেয়, তারপর তা শুকিয়ে যায়, তখন তুমি তা হলুদ বর্ণের দেখতে পাও, তারপর তা খড়কুটায় পরিণত হয়। আর আখিরাতে আছে কঠিন আযাব এবং আল্লাহর পক্ষ থেকে ক্ষমা ও সন্তুষ্টি। আর দুনিয়ার জীবনটা তো ধোকার সামগ্রী ছাড়া আর কিছুই নয় (সূরা আল হাদীদ:২০)

আল্লাহ তাআলা অন্য এক আয়াতে দুনিয়ার জীবনের উদাহরণ দিয়ে বলেন :

{إِنَّمَا مَثَلُ الْحَيَاةِ الدُّنْيَا كَمَاءٍ أَنْزَلْنَاهُ مِنَ السَّمَاءِ فَاخْتَلَطَ بِهِ نَبَاتُ الْأَرْضِ مِمَّا يَأْكُلُ النَّاسُ وَالْأَنْعَامُ حَتَّى إِذَا أَخَذَتِ الْأَرْضُ زُخْرُفَهَا وَازَّيَّنَتْ وَظَنَّ أَهْلُهَا أَنَّهُمْ قَادِرُونَ عَلَيْهَا أَتَاهَا أَمْرُنَا لَيْلًا أَوْ نَهَارًا فَجَعَلْنَاهَا حَصِيدًا كَأَنْ لَمْ تَغْنَ بِالْأَمْسِ كَذَلِكَ نُفَصِّلُ الْآَيَاتِ لِقَوْمٍ يَتَفَكَّرُونَ.}

নিশ্চয় দুনিয়ার জীবনের তুলনা তো পানির ন্যায় যা আমি আকাশ থেকে নাযিল করি, অতঃপর তার সাথে যমীনের উদ্ভিদের মিশ্রণ ঘটে, যা মানুষ ও চতুষ্পদ জন্তু ভোগ করে। অবশেষে যখন যমীন শোভিত ও সজ্জিত হয় এবং তার অধিবাসীরা মনে করে যমীনে উৎপন্ন ফসল করায়ত্ব করতে তারা সক্ষম, তখন তাতে রাতে কিংবা দিনে আমার আদেশ চলে আসে। অতঃপর আমি সেগুলোকে বানিয়ে দেই কর্তিত ফসল, মনে হয় গতকালও এখানে কিছু ছিল না। এভাবে আমি চিন্তাশীল লোকদের জন্য নিদর্শনসমূহ বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করি (সূরা ইউনুস:২৪)

পরকালের জীবনই প্রকৃত জীবন, অনন্ত জীবন। বিষয়টি অন্য এক আয়াতে আল্লাহ তাআলা এভাবে বলেছেন

{وَمَا هَذِهِ الْحَيَاةُ الدُّنْيَا إِلَّا لَهْوٌ وَلَعِبٌ وَإِنَّ الدَّارَ الْآخِرَةَ لَهِيَ الْحَيَوَانُ لَوْ كَانُوا يَعْلَمُونَ.}

আর এ দুনিয়ার জীবন খেল-তামাশা ছাড়া আর কিছুই নয় এবং নিশ্চয় আখিরাতের নিবাসই হলো প্রকৃত জীবন, যদি তারা জানত (সূরা আল আনকাবূত:৬৪)

আলী রাযি. বলেন, দুনিয়া পশ্চাৎপানে চলে গেছে। আর আখিরাত সম্মুখ থেকে এগিয়ে আসছে। আর এ উভয়টার জন্যই রয়েছে কিছু সন্তান। অতঃপর তোমরা আখিরাতের সন্তান হও। দুনিয়ার সন্তান হয়ো না। কেননা আজ হলো আমল আজ হিসাব নেই। আর কাল হলো হিসাব কাল আমল নেই (তালীকাতুল বুখারী)।

যাইদ ইবনে ছাবিত রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন

(مَنْ كَانَتِ الدُّنْيَا هَمَّهُ، فَرَّقَ اللَّهُ عَلَيْهِ أَمْرَهُ، وَجَعَلَ فَقْرَهُ بَيْنَ عَيْنَيْهِ، وَلَمْ يَأْتِهِ مِنَ الدُّنْيَا إِلَّا مَا كُتِبَ لَهُ، وَمَنْ كَانَتِ الْآخِرَةُ نِيَّتَهُ، جَمَعَ اللَّهُ لَهُ أَمْرَهُ، وَجَعَلَ غِنَاهُ فِي قَلْبِهِ، وَأَتَتْهُ الدُّنْيَا وَهِيَ رَاغِمَةٌ)

দুনিয়া যার গুরুত্বের বিষয় হবে, আল্লাহ তার সবকিছু বিক্ষিপ্ত করে দিবেন। তার দারিদ্র্যকে তার সামনে চাক্ষুষ্মান করে দেবেন। তার কাছে দুনিয়া আসবে না তবে যেটুকু লেখা আছে কেবল সেটুকু। আর আখিরাত যার উদ্দেশ্য হবে আল্লাহ তার সবকিছু সুসংহত করে দেবেন। তিনি তার হৃদয়ে ধনাঢ্যতা দান করবেন। আর দুনিয়া তার কাছে বাধ্য হয়েই আসবে (ইবনে মাজাহ, সহীহ)।

তাই দুনিয়ার পেছনে দৌড়ঝাঁপ নয়, আখিরাতের পেছনেই সর্বশক্তি নিয়োগ করুন। তাহলে দুনিয়া আখিরাত উভয়টাই পাবেন। আখিরাতের উপর দুনিয়াকে প্রাধান্য দিলে দুনিয়াও হারাবেন আখিরাতও হারাবেন। দুনিয়া তো হলো আখেরাতের শস্যক্ষেত্র। এ শস্যক্ষেত্রে যে ফসল ফলাবে না সে আখিরাতকে হারিয়ে ফেলবে।

(كُنْ فِيْ الدُّنْيَا كَأَنَّكَ غَرِيْبٌ أَوْ عَابِرِ سَبِيْلٍ)

দুনিয়াতে তুমি এমনভাবে থাকো যেন তুমি অপরিচিত অথবা পথিক(বুখারী)।

ইবনে উমর রাযি. থেকে বর্ণিত এ হাদীসের ব্যাখ্যায় ইবেন রজব হাম্বলী রহ. বলেন, এ হদীসটি দুনিয়াবিষয়ক আশা-ভরসার হ্রস্বতা-ক্ষীণতার ব্যাপারে মৌলিক ভাবধারামূলক হাদীস। তাই দুনিয়াকে আবাসস্থল বানিয়ে, ঘরবাড়ী সাব্যস্ত করে পরিতৃপ্তি অনুভব করা মুমিনের জন্য সমীচীন নয়। বরং দুনিয়াতে মুমিনকে এমনভাবে থাকতে হবে, যেন সে সফর অবস্থায় আছে এবং প্রস্থানের জন্য মাল-সামানা গোছগাছ করছে (জামেউল উলূমি ওয়াল হিকাম)।

সুপ্রিয় ভাই ও বন্ধুগণ! আখিরাতের জীবনই আসল জীবন। মানুষ আখিরাতের বাস্তব দৃশ্য যখন স্বচক্ষে দেখবে, সে নিজেই তখন স্বীকার করবে, আখিরাতের জীবনই আসল জীবন। সে বলবে :

{يَا لَيْتَنِي قَدَّمْتُ لِحَيَاتِي}

হায়! যদি আমি কিছু আগে পাঠাতাম আমার জীবনের জন্য (সূরা আল ফাজর: ২৪)

এটা এ কারণে যে আখিরাতে প্রতিটি মানুষই অমর হয়ে যাবে এবং অমর হয়েই সে অনন্তকালের জন্য পরকালের জীবনযাপন শুরু করবে। সেখানে থাকবে মানুষের মনোতৃপ্তিকর ও চক্ষুশীতলকারী সবকিছু। আখিরাত হলো দারুসসালাম বা শান্তির নীড়। সকল ত্র&ldquoটি ও অপূর্ণতা থেকে মুক্ত। সকল বালা-মুসীবত থেকে মুক্ত। সেখানে থাকবে না কোনো রোগ-শোক। থাকবে না কোনো মৃত্যু। থাকবে না কোনো কষ্ট-যাতনা অথবা বুড়িয়ে যাওয়ার আশঙ্কা। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন-

(لَمَوْضِعُ سَوْطٍ أَحَدِكُمْ فِي الْجَنَّةِ خَيْرٌ مِنْ الدُّنْيَا وَمَا فِيْهَا)

নিশ্চয় জান্নাতে তোমাদের কারো চাবুক রাখার পরিমাণ জায়গা দুনিয়া ও দুনিয়ায় যা আছে তার চেয়ে উত্তম। হ্যাঁ, এটাই হলো বাস্তবতা।

জান্নাতে একটি লাঠি রাখার স্থান তাবৎ দুনিয়া থেকে উত্তম। দুনিয়ায় যা কিছু সুখ-শান্তি, সমৃদ্ধি ও খুশি, আমোদ-আহ্লাদ নেয়ামত-সামগ্রী আছে জান্নাত তার থেকে উত্তম। জান্নাত যদি দুনিয়া থেকে উত্তম হয়ে থাকে তাহলে আমরা দুনিয়ায় যে সামান্য সময় পেলাম তা কি আদৌ কোনো হিসাবে আসতে পারে? না, পারে না। যদি জান্নাতের একটি চাবুক রাখার জায়গা দুনিয়া থেকে উত্তম হয়ে থাকে তাহলে একজন সর্বনিম্ন জান্নাতবাসীর বিশাল বাসস্থান কতোই না উত্তম হবে, যা দুহাজার বছর চলার পথ পরিমাণ বড় হবে এবং যার নিকটবর্তী ও দূরবর্তী উভয় প্রান্ত জান্নাতবাসী সমানভাবে দেখতে পাবে! আল্লাহ তাআলা জান্নাতের বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেন :

{فَأَمَّا إِنْ كَانَ مِنَ الْمُقَرَّبِينَ فَرَوْحٌ وَرَيْحَانٌ وَجَنَّةُ نَعِيمٍ}

অতঃপর সে যদি নৈকট্যপ্রাপ্তদের একজন হয়, তবে তার জন্য থাকবে বিশ্রাম, উত্তম জীবনোপকরণ ও সুখময় জান্নাত (সূরা আল ওয়াকিআ :৮৮-৮৯)

আল্লাহ তাআলা অন্যত্র বলেন:

{وَجَزَاهُمْ بِمَا صَبَرُوا جَنَّةً وَحَرِيرًا. مُتَّكِئِينَ فِيهَا عَلَى الْأَرَائِكِ لَا يَرَوْنَ فِيهَا شَمْسًا وَلَا زَمْهَرِيرًا. وَدَانِيَةً عَلَيْهِمْ ظِلَالُهَا وَذُلِّلَتْ قُطُوفُهَا تَذْلِيلًا. وَيُطَافُ عَلَيْهِمْ بِآَنِيَةٍ مِنْ فِضَّةٍ وَأَكْوَابٍ كَانَتْ قَوَارِيرَ. قَوَارِيرَ مِنْ فِضَّةٍ قَدَّرُوهَا تَقْدِيرًا. وَيُسْقَوْنَ فِيهَا كَأْسًا كَانَ مِزَاجُهَا زَنْجَبِيلًا. عَيْنًا فِيهَا تُسَمَّى سَلْسَبِيلًا. وَيَطُوفُ عَلَيْهِمْ وِلْدَانٌ مُخَلَّدُونَ إِذَا رَأَيْتَهُمْ حَسِبْتَهُمْ لُؤْلُؤًا مَنْثُورًا. وَإِذَا رَأَيْتَ ثَمَّ رَأَيْتَ نَعِيمًا وَمُلْكًا كَبِيرًا. عَالِيَهُمْ ثِيَابُ سُنْدُسٍ خُضْرٌ وَإِسْتَبْرَقٌ وَحُلُّوا أَسَاوِرَ مِنْ فِضَّةٍ وَسَقَاهُمْ رَبُّهُمْ شَرَابًا طَهُورًا}

আর তারা যে ধৈর্যধারণ করেছিল তার পরিণামে তিনি তাদেরকে জান্নাত ও রেশমী বস্ত্রের পুরস্কার প্রদান করবেন। তাদের উপর সন্নিহিত থাকবে উদ্যানের ছায়া এবং তার ফলমূলের থোকাসমূহ তাদের সম্পূর্ণ আয়ত্তাধীন করা হবে। তাদের চারপাশে আবর্তিত হবে রৌপ্যপাত্র ও স্ফটিক স্বচ্ছ পানপাত্র- রূপার ন্যায় শুভ্র স্ফটিক পাত্র যার পরিমাপ তারা নির্ধারণ করবে। সেখানে তাদেরকে পান করানো হবে পাত্রভরা আদা-মিশ্রিত সুরা, সেখানকার এক ঝর্ণা যার নাম হবে সালসাবীল। আর তাদের চারপাশে প্রদক্ষিণ করবে চিরকিশোরেরা তুমি তাদেরকে দেখলে বিক্ষিপ্ত মুক্তা মনে করবে। আর তুমি যখন দেখবে তুমি সেখানে দেখতে পাবে স্বাচ্ছন্দ্য ও বিরাট সাম্রাজ্য। তাদের উপর থাকবে সবুজ ও মিহি রেশমের পোশাক এবং মোটা রেশমের পোশাক, আর তাদেরকে পরিধান করানো হবে রূপার চুড়ি এবং তাদের রব তাদেরকে পান করাবেন পবিত্র পানীয় (সূরা আল ইনসান:১২-২১)

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:

(أَوَّلُ زُمْرَةٍ تَلِجُ الْجَنَّةَ، صُورَتُهُمْ عَلَى صُورَةِ الْقَمَرِ لَيْلَةَ الْبَدْرِ، لا يَبْصُقُونَ فِيهَا، وَلا يَمْتَخِطُونَ، وَلا يَتَغَوَّطُونَ، آنِيَتُهُمْ فِيهَا الذَّهَبُ، أَمْشَاطُهُمْ مِنَ الذَّهَبِ وَالْفِضَّةِ، وَمَجَامِرُهُمْ الألُوَّةُ، وَرَشْحُهُمْ الْمِسْكُ، وَلِكُلِّ وَاحِدٍ مِنْهُمْ زَوْجَتَانِ، يُرَى مُخُّ سُوقِهِمَا مِنْ وَرَاءِ اللَّحْمِ مِنَ الْحُسْنِ، لا اخْتِلاَفَ بَيْنَهُمْ، وَلاَ تَبَاغُضَ، قُلُوبُهُمْ قَلْبٌ وَاحِدٌ، يُسَبِّحُونَ اللَّهَ بُكْرَةً وَعَشِيًّا)

জান্নাতে প্রবেশকারী সর্বপ্রথম দলের আকৃতি হবে পূর্ণিমা-রাতের ন্যায়। তারা জান্নাতে থুথু ফেলবে না, নাকের শ্লেষ্মা ফেলবে না, মল ত্যাগ করবে না, সেখানে তাদের (খাদ্য ও পানীয়ের) পাত্র হবে সোনার তৈরি। তাদের চিরুনি হবে সোনা ও রূপার। তাদের ধুপদানী হবে উলওয়ার। তাদের ঘাম হবে মিসকের ন্যায়। আর তাদের প্রত্যেকের থাকবে দুজন স্ত্রী। সৌন্দর্যের আধিক্যে মাংসের বাইরে থেকে যাদের পায়ের নলার অভ্যন্তর ভাগ পর্যন্ত দেখা যাবে। তাদের মাঝে কোনো মতানৈক্য থাকবে না, পরস্পরের প্রতি ঘৃণা থাকবে না। তাদের সকলের হৃদয় হবে এক হৃদয়ের মতো। তারা সকাল-সন্ধ্যায় আল্লাহর পবিত্রতা বয়ান করবে (বুখারী ও মুসলিম, হাদীসের শব্দগুলো বুখারী থেকে নেয়া)।

بَارَكَ اللهُ لِيْ وَلَكُمْ فِي الْقُرْآن الْعَظِيْمِ وَنَفَعَنِيْ وَإِيَّاكُمْ بِمَا فِيْهِ مِنَ الْآياتِ وَالذِّكْر الحْكِيْمِ, أقُوْلُ قَوْلِيْ هَذَا وَأَسْتَغْفِرُ اللهَ لِيْ وَلَكُمْ فَاسْتَغْفِرُوهُ إِنَّهُ هُو الْغَفُور الرَّحِيْمْ .

اَلْحَمْدُ لِلَّهِ عَلَى إِحْسَانِهِ، وَالشُّكْرُ لَهُ عَلَى تَوْفِيْقِهِ وَامْتِنَانِهِ، وَأَشْهَدُ أَن لَّا إِلَهَ الهُم وَحْدَهُ لَا شَرِيْكَ لَهُ تَعْظِيْماً لِشَأْنِهِ، وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّداً عَبْدُهُ وَرَسُوْلُهُ الدَّاعِيْ إِلَى رِضْوَانِهِ صَلَّى الهُل عَلَيْهِ وَعَلَى آلِهِ وَأَصْحَابِهِ وَسَلَّمَ تَسْلِيْماً كَثِيْراً .

সুপ্রিয় ভাইয়েরা! আখিরাতই যেহেতু প্রকৃত জীবন তাই আমাদের উত্তম পূর্বপুরুষগণ, সালাফে সালেহীনগণ দুনিয়াকে কেবল আখিরাতের শস্যক্ষেত্র হিসেবেই ব্যবহার করেছেন। দুনিয়াকে তাঁরা শুধুই পরকালের পাথেয় সংগ্রহের কালপর্ব বলে ভেবেছেন। দুনিয়াকে উদ্দেশ্য হিসেবে নেননি। দুনিয়ার প্রতি তাঁরা লালায়িত ছিলেন না। দুনিয়ার যশ-জৌলুস তাঁদের হৃদয়কে আকৃষ্ট করতে পারেনি। বরং তাঁদের সমস্ত অস্তিত্ব জুড়ে ছিল পরকালের ভাবনা। উমর ইবনে আবদুল আযীয রহ. বলেন

(إِنَّ الدُّنْيَا لَيْسَتْ بِدَارِ قَرَارِكُمْ، كَتَبَ الهُك عَلَيْهَا الْفَنَاءَ، وَكَتَبَ اللهُ عَلَى أَهْلِهَا مِنْهَا الظَّعْنَ، فَكَمْ مِنْ عَامِرٍ مُوَثَّقٍ عَنْ قَلِيْلٍ يَخْرُبُ، وَكَمْ مِنْ مُقِيْمٍ مُغْتَبِطٍ عَمَّا قَلِيْلٍ يَظْعَنُ، فَأَحْسِنُوْا رَحِمَكُمُ اللهُ مِنْهَا الرِِّحْلَةَ بِأَحْسَنِ مَابِحَضْرَتِكُمْ مِنَ النُّقْلَةِ، وَتَزَوَّدُوْا فَإِنَّ خَيْرَ الزَّادِ التَّقْوَى)

নিশ্চয় দুনিয়া তোমাদের স্থায়ী বাসস্থান নয়। আল্লাহ তাআলা দুনিয়ার ভাগ্যে ধ্বংস হয়ে যাওয়া লিখে রেখেছেন। আর যারা এর বাসিন্দা তাদের ভাগ্যে তো দুনিয়া থেকে প্রস্থান করে অন্যত্র চলে যাওয়া লিখে রেখেছেন। কতো উন্নত-মজবুত (বসতি) বেশিদিন না যেতেই ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়। কতো আনন্দে উদ্বেলিত বসবাসকারী মুহূর্তের মধ্যেই প্রস্থান করে চলে যায়। তাই তোমাদের কাছে উত্তম যা আছে তা গোছগাছ করে সফরের জন্য ভালোভাবে তৈরি হয়ে নাও। আর সঙ্গে করে পাথেয় নাও। নিশ্চয় সর্বোত্তম পাথেয় হলো তাকওয়া (জামেউল উলূম ওয়াল হিকাম)।

ইয়াহইয়া ইবনে মুআয রাযি. বলেন

الدُّنْيَا خَمْرُ الشَّيْطَانِ، مَنْ سَكَرَ مِنْهَا لَمْ يُفِقْ إِلَّا فِيْ عَسْكَرِ الْمَوْتِ نَادِماً مَعَ الْخَاسِرِيْنَ

দুনিয়া হলো শয়তানের মদ। যে তা পান করে নেশাগ্রস্থ হয় সে লজ্জিত হয়ে ধ্বংসশীলদের সাথে মৃত্যুর শিবিরে পৌঁছার আগে চৈতন্য ফিরে পায় না।

হাবীব আবু মুহাম্মদ রহ. মৃত্যুমুখে পতিত ব্যক্তি যেভাবে অসিয়ত করে, প্রতিদিনই তিনি সেভাবে অসিয়ত করতেন। মৃত্যুর পর গোসল দেয়া ও অন্যান্য কর্ম কিভাবে করতে হবে সেগুলো তিনি বলতেন। তিনি সকাল বেলায় কাঁদতেন। আবার সন্ধ্যা বেলায়ও কাঁদতেন। তিনি কেন এভাবে কাঁদেন, তাঁর স্ত্রীকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, আল্লাহর কসম, তিনি যখন সন্ধ্যায় উপনীত হন তখন আশঙ্কা করেন সকাল পর্যন্ত বাঁচবেন না। আবার যখন সকালে উপনীত হন তখন আশঙ্কা করেন সন্ধ্যা পর্যন্ত বুঝি আর বাঁচবেন না।

মুহাম্মদ ইবনে ওয়াসে রহ. যখন রাতে ঘুমোতে যেতেন তখন তাঁর পরিবারকে বলতেন, তোমাদেরকে আল্লাহর হাওলা করছি। কে জানে হয়তো আমার এ নিদ্রাই হবে শেষ নিদ্রা যা থেকে আমি আর উঠতে পারব না। প্রতিদিন তিনি ঘুমোতে গেলে এরূপ করতেন।

বকর আল মুযানী বলেন, যদি পারো তাহলে অসিয়তনামা লিখে শোয়ার সময় মাথার কাছে রেখে দাও। কেননা হতে পারে রাত্রিটা তুমি দুনিয়াবাসীদের সাথে কাটাচ্ছ, আর সকালটা হবে তোমার আখিরাতবাসীদের সাথে।

ওয়াইস কুরুনী রহ.-কে যখন বলা হত, আপনার দিনকাল কেমন যাচ্ছে? তিনি বলতেন, ঐ ব্যক্তির দিনকাল আর কেমন যাবে, যে সন্ধ্যা বেলায় উপনীত হলে ধারণা করে যে, সে সকাল পর্যন্ত পৌঁছতে পারবে না, আবার সকাল বেলায় উপনীত হলে ধারণা করে যে, সে আর সন্ধ্যা করা পর্যন্ত পৌঁছতে পারবে না। অতঃপর তাকে হয়তো জান্নাতের সুসংবাদ দেয়া হবে অথবা জাহান্নামের দুঃসংবাদ।

প্রিয় ভাই ও বন্ধুগণ! আমাদের কে না চায় দুনিয়া ও আখেরাতে সৌভাগ্যবান হতে? আমাদের কে চায় আখিরাতের প্রকৃত জীবনকে বরবাদ করে ধ্বংসশীল দুনিয়াকে নির্মাণ করতে? আমাদের মধ্যে এমন কেউ কি আছে যে জান্নাতের অশেষ-অকল্পনীয় সুখ ভোগ করতে আগ্রহী নয়? যদি কেউ না থাকে তাহলে আমাদের অবশ্য কর্তব্য হবে নিজদেরকে তাকওয়া-পরহেজগারীতে সমৃদ্ধ করা। আখিরাতের পাথেয় সংগ্রহ করা। আর জেনে রাখবেন, আল্লাহ তাআলা আমলদার মুমিনদের জন্য দুনিয়া ও আখেরাত- উভয় জাহানেই হায়াতে তাইয়েবা তথা উত্তম জীবন দান করার ঘোষণা দিয়েছেন। ইরশাদ হয়েছে :

{مَنْ عَمِلَ صَالِحًا مِنْ ذَكَرٍ أَوْ أُنْثَى وَهُوَ مُؤْمِنٌ فَلَنُحْيِيَنَّهُ حَيَاةً طَيِّبَةً وَلَنَجْزِيَنَّهُمْ أَجْرَهُمْ بِأَحْسَنِ مَا كَانُوا يَعْمَلُونَ}

যে মুমিন অবস্থায় নেক আমল করবে, পুরুষ হোক বা নারী, আমি তাকে পবিত্র জীবন দান করব এবং তারা যা করত তার তুলনায় অবশ্যই আমি তাদেরকে উত্তম প্রতিদান দেব (সূরা আন-নাহল)

আর আল্লাহ যা ওয়াদা করেন তা তিনি অবশ্যই পূরণ করেন। তবে এর জন্য প্রয়োজন আল্লাহর দেয়া শর্ত পূরণ করা। উল্লিখিত আয়াতে আল্লাহ তাআলা ঈমান ও নেক আমালের শর্ত করেছেন। আমারা যদি এ শর্ত পূরণ করতে পারি তাহলে দুনিয়া আখিরাত উভয় জাহানেই আল্লাহ আমাদের হায়াতে তাইয়িবা দান করবেন। তাহলে আর ভয় কিসের? আসুন আমরা প্রকৃত ঈমানে সজ্জিত হয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ি নেক আমলের ময়দানে। শুরু করি প্রকৃত জীবন গড়ার কর্মতৎপরতা।

মুহতারাম হাযেরীন! আমাদের কার জীবনের কতটুকু বাকী আছে তা আল্লাহ ছাড়া আর কেউ বলতে পারবে না। তাই বিগত জীবনে যে যাই করি না কেন আসুন এখন থেকে নিজদের বিশুদ্ধ করে নিই। নামাজ, রোযা সাদকা, মাতা-পিতার সাথে সদাচরণ, আল্লাহর রাস্তায় অর্থদানসহ সকল নেক- আমলের প্রতি ঐকান্তিকভাবে মনোনিবেশ করি। দুনিয়ার পেছনে হা-হুতাশ বাদ দিয়ে প্রকৃত জীবন বিনির্মাণে মরিয়া হয়ে চেষ্টা করে যাই। কেননা পরকালের জীবনে যদি দুঃখ ভোগ করতে হয়, তাহলে সে দুঃখ থেকে পরিত্রাণের কোনো পথ খুঁজে পাওয়া যাবে না। পরকালে যারা দুঃখ ভোগ করবে তাদের আফসোস হা-হুতাশের কোনো সীমা থাকবে না। মানুষের ইচ্ছে হবে সামান্য সময়ের জন্য হলেও পৃথিবীতে ফিরে এসে দান-সাদকা করতে, সবকিছু আল্লাহর পথে বিলিয়ে দিতে, সৎকর্মশীলদের দলভুক্ত হতে কিন্তু মানুষ তার এ ইচ্ছা বাস্তবায়নের আদৌ কোনো সুযোগ পাবে না। আল্লাহ তাআলা পবিত্র কুরআনে ইরশাদ করেন :

{يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تُلْهِكُمْ أَمْوَالُكُمْ وَلَا أَوْلَادُكُمْ عَنْ ذِكْرِ اللَّهِ وَمَنْ يَفْعَلْ ذَلِكَ فَأُولَئِكَ هُمُ الْخَاسِرُونَ . وَأَنْفِقُوا مِنْ مَا رَزَقْنَاكُمْ مِنْ قَبْلِ أَنْ يَأْتِيَ أَحَدَكُمُ الْمَوْتُ فَيَقُولَ رَبِّ لَوْلَا أَخَّرْتَنِي إِلَى أَجَلٍ قَرِيبٍ فَأَصَّدَّقَ وَأَكُنْ مِنَ الصَّالِحِينَ. وَلَنْ يُؤَخِّرَ اللَّهُ نَفْسًا إِذَا جَاءَ أَجَلُهَا وَاللَّهُ خَبِيرٌ بِمَا تَعْمَلُونَ.}

হে মুমিনগণ, তোমাদের ধনসম্পদ ও সন্তান- সন্ততি যেন তোমাদেরকে আল্লাহর স্মরণ থেকে উদাসীন না করে। আর যারা এরূপ করে তারাই তো ক্ষতিগ্রস্ত। আর আমি তোমাদেরকে যে রিযক দিয়েছি তা থেকে ব্যয় কর, তোমাদের কারো মৃত্যু আসার পূর্বে। কেননা তখন সে বলবে, হে আমার রব, যদি আপনি আমাকে আরো কিছু কাল পর্যন্ত অবকাশ দিতেন, তাহলে আমি দানসদাকা করতাম। আর সৎ লোকদের অন্তর্ভুক্ত হতাম। আর আল্লাহ কখনো কোন প্রাণকেই অবকাশ দেবেন না, যখন তার নির্ধারিত সময় এসে যাবে। আর তোমরা যা কর সে সম্পর্কে আল্লাহ সম্যক অবহিত (সূরা আল মুনাফিকূন:৯-১১)

اَللَّهُمَّ صَلِّ وَسَلِّمْ وَبَارِكْ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ كَمَا صَلَّيْتَ وَبَارَكْتَ عَلَى إِبْرَاهِيْمَ وَعَلَى آلِ إِبْرَاهِيْمَ إِنَّكَ حَمِيْدٌ مَجِيْدٌ وَارْضَ اللَّهُمَّ عَنِ الْخُلَفَاءِ الرَّاشِدِيْنَ وَعَنْ آلِ نَبِيِّكَ الطَّيِّبِيْنَ الطَّاهِرِيْنَ وَعَنْ أَزْوَاجِهِ أُمُّهَاتِ الْمُؤْمِنِيْنَ وَعَنِ الصَّحَابَةِ أَجْمَعِيْنَ وَعَنِ التَّابِعِيْنَ وَمَنْ تَبِعَهُمْ بِإِحْسَانٍ إِلَى يَوْمِ الدِّيْنِ وَعَنَّا مَعَهُمْ بِمَنِّكَ وَكَرَمِكَ وَعَفْوِكَ وَإِحْسَانِكَ يَا أَرْحَمَ الْرَّاحِمِيْنَ.

হে আল্লাহ আপনি আমাদের দুনিয়া ও আখিরাত দুরস্ত করে দিন। আপনি আমাদেরকে প্রকৃত জীবনের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণের তাওফীক দান করুন। দুনিয়ার চাকচিক্যে আমরা যাতে ধোঁকা না খাই সেই তাওফীক আমাদেরকে দান করুন। আম্বিয়ায়ে কিরাম ও সালেহীনগণ যেভাবে দুনিয়ার জীবন যাপন করেছেন আমাদেরকেও তদ্র&fnofপ যাপনের তাওফীক দান করুন।

ইয়া রাব্বালা আলামীন! আপনি আমাদের সকল গুনাহ-খাতা মাফ করে দিন। আপনি আমাদেরকে, আমাদের পরিবার পরিজনকে, আমাদের দেশবাসী এবং পৃথিবীর সকল মুসলমানকে আপনার অনুগত বান্দা হওয়ার তাওফীক দান করুন। আপনি আমাদেরকে সিরাতুল মুস্তাকীমে সুদৃঢ় থাকার তাওফীক দান করুন।

হে আল্লাহ আপনি আমাদেরকে সকল ফেতনা-ফাসাদ থেকে হিফাযত করুন। আপনি আমাদের জান-মাল-ইজ্জত-আব্র হিফাযত করুন। আপনি আমাদের মা-বোনদের হিফাযত করুন। তাদেরকে পর্দা-পুশিদা বজায় রেখে চলার তাওফীক দিন। আমীন ইয়া রাব্বাল আলামীন।

عبَادَ اللهِ رَحمِكُمُ الله : ( إِنَّ اللهَ يَأْمُرُ بِالْعَدْلِ والإحْسَانِ وَإيْتَاءِ ذِي الْقُرْبَى وَيَنْهَى عَنِ الْفَحْشَاءِ وَالمْنْكَرِ وَالْبَغْيِ يَعِظُكُمْ لَعَلَّكُمْ تَذَكَّرُوْنِ ) اُذْكُرُوا اللهَ يَذْكُرْكُمْ وَادْعُوْهُ يَسْتجِبْ لَكُمْ وَلَذِكْرُ اللهِ تَعَالَى أَعْلَى وَأَعْظَمُ وَأَكْبَرُ.