islamkingdomfacebook islamkingdomtwitte islamkingdomyoutube


মানুষের সাথে আরচণের মানদণ্ড ও বিধিমালা


9266
পাঠ সংক্ষেপ
মানুষের মর্যাদার প্রকৃত মাপকাঠি কী? মানুষের মধ্যে কোন্ গুণ থাকলে সে মর্যাদা লাভ করবে আর কোন্ গুণের মর্যাদা হারাবে আমরা যদি এ প্রসঙ্গে কুরআন সুন্নাহর ভাষ্য মন্থন করি তাহলে দেখতে পাই যে, আল্লাহ তা‘আলা এবং তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকওয়া এবং ধর্মনিষ্ঠাকে সম্মানের মাপকাঠি হিসেবে নির্ধারণ করেছেন। আল্লাহ তা‘আলা কর্তৃক নির্ধারিত এ মাপকাঠি যুগপৎ দুনিয়া ও আখিরাতে প্রযোজ্য। তার মানে হলো, যার মধ্যে তাকওয়া আল্লাহভীতি ধর্মপরায়ণতা আছে সে আখিরাতে যেমন সম্মানিত দুনিয়াতেও তেমনি মর্যাদাপূর্ণ। যার মধ্যে যতো বেশি তাকওয়া থাকবে সে ততো বেশি সম্মানের উপযুক্ত বলে বিবেচিত হবে।

اَلْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِيْ بِنِعْمَتِهِ تَتِمُّ الصَّالِحَاتُ، وَ صَلَّي اللهُ وَسَلَّمَ وَ بَارَكَ عَلَي مَنْ خُتِمَتْ بِهِ الرِّسَالَةُ مُحَمَّدُ بْنِ عَبْدِ اللهِ، وَعَلَي آلِهِ وَصَحْبِهِ وَ أَزْوَاجِهِ الطَّاهِرَاتِ الْعَفِيْفَاتِ. أَمَّا بَعْدُ :

প্রিয় মুসলিম ভাই ও বন্ধুগণ! আজ আমি আপনাদের সামনে ইসলামের দৃষ্টিতে মানুষের মর্যাদার মাপকাঠি ও আচার আচরণের মানদণ্ড নিয়ে আলোচনা করব।

মানুষের মর্যাদার প্রকৃত মাপকাঠি কী? মানুষের মধ্যে কোন্ গুণ থাকলে সে মর্যাদা লাভ করবে আর কোন্ গুণের মর্যাদা হারাবে এ ব্যাপারে আমরা একেক রকম ধারণা পোষণ করি। কেউ মনে করি, অঢেল সম্পদের মালিক হলে কিংবা প্রভাব প্রতিপত্তিশীল হলে মানুষ সম্মান পাওয়ার উপযুক্ত হয়। আবার কেউ মনে করি, বড় কোনো পদের অধিকারী হলেই কেবল সম্মানের উপযুক্ত হওয়া যায়। কিন্তু সম্মানের এ মাপকাঠি আমরা নিজেরা তৈরি করে নিয়েছি। অথচ আল্লাহ তা‘আলা পবিত্র কুরআনে সম্মানের যে মাপকাঠি বর্ণনা করেছেন এবং রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সম্মানের যে মানদণ্ড নির্ধারণ করেছেন তা আমাদের এ মাপকাঠি থেকে ভিন্ন। আমরা যদি এ প্রসঙ্গে কুরআন সুন্নাহর ভাষ্য মন্থন করি তাহলে দেখতে পাই যে, আল্লাহ তা‘আলা এবং তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকওয়া এবং ধর্মনিষ্ঠাকে সম্মানের মাপকাঠি হিসেবে নির্ধারণ করেছেন। আল্লাহ তা‘আলা কর্তৃক নির্ধারিত এ মাপকাঠি যুগপৎ দুনিয়া ও আখিরাতে প্রযোজ্য। তার মানে হলো, যার মধ্যে তাকওয়া আল্লাহভীতি ধর্মপরায়ণতা আছে সে আখিরাতে যেমন সম্মানিত দুনিয়াতেও তেমনি মর্যাদাপূর্ণ। যার মধ্যে যতো বেশি তাকওয়া থাকবে সে ততো বেশি সম্মানের উপযুক্ত বলে বিবেচিত হবে। নিম্নে বর্ণিত আয়াত ও হাদীসগুলো এ কথারই প্রমাণ বহন করে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:

{إِنَّ أَكْرَمَكُمْ عِنْدَ اللَّهِ أَتْقَاكُمْ}

‘নিশ্চয় তোমাদের মধ্যে আল্লাহর নিকট সেই সবচে’ বেশি সম্মানিত যে তোমাদের মধ্যে অধিক তাকওয়াধারী’ (সূরা আল হুজুরাত: ১৩)

সহীহ বুখারীতে এসেছে রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন:

{خَيْرُكُمْ مَنْ تَعَلَّمَ الْقُرْآنَ وَ عَلَّمَهُ}

‘তোমাদের মধ্যে সেই সর্বশ্রেষ্ঠ, যে নিজে কুরআন শিখেছে এবং অপরকে শিখিয়েছে’।

অন্য এক হাদীসে এসেছে :

(خَيْرُكُمْ مَنْ يُرْجَى خَيْرُهُ وَ يُؤْمَنُ شَرُّهُ)

‘তোমাদের মধ্যে সেই সর্বশ্রেষ্ঠ, যার কাছ থেকে কল্যাণের আশা করা হয় এবং যার অনিষ্ট থেকে সবাই নিরাপদ থাকে’। (তিরমিযী, সহীহ)

অন্য এক হাদীসে তিনি বলেন:

(خَيْرُكُمْ خَيْرُكُمْ لِأَهْلِهِ وَ أَنَا خَيْرُكُمْ لِأَهْلِيْ)

‘তোমাদের মধ্যে উত্তম সে, যে তার পরিবারের কাছে উত্তম। আর আমি আমার পরিবারের কাছে তোমাদের চেয়ে উত্তম’। (তিরমিযী)

তিনি আরো বলেন :

(خَيْرُكُمْ إِسْلَامًا أَحَاسِنُكُمْ أَخْلَاقًا إِذَا فَقُهُوا)

‘যার চরিত্র সবচে’ ভালো সে সবচেয়ে ভালো মুসলমান, যদি তারা দীনের জ্ঞান লাভ করে’। (আল আদাবুল মুফরাদ, আলবানী হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন)

রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরো বলেন :

(خِيَارُهُمْ فِي الْجَاهِلِيَّةِ خِيَارُهُمْ فِي الْإِسْلَامِ إِذَا فَقُهُوا)

‘জাহিলী যুগে যারা ভালো ছিল ইসলামের যুগেও তারা ভালো, যদি তারা দীনের জ্ঞান লাভ করে’ (বুখারী)।

রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরো বলেন:

(خَيْرُكُمْ مَنْ أَطْعَمَ الطَّعَامَ أَوْ الَّذِيْنَ يُطْعِمُوْنَ الطَّعَامَ)

‘তোমাদের মধ্যে তারা উত্তম যারা অন্যকে আহার করায়’ (আলবানী: সহীহুল জামে)।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে প্রশ্ন করা হয়েছে, উত্তম মানুষ কে? উত্তরে তিনি বলেছেন :

(مَنْ طَالَ عُمُرُهُ وَحَسُنَ عَمَلُهُ)

‘যে দীর্ঘ জীবন পেল এবং তার আমল ভালো হলো’ (তিরমিযী)।

প্রিয় ভাই ও বন্ধুগণ! এসব আয়াত ও হাদীসের ভাষ্য থেকে আমরা বুঝতে পারলাম যে, আল্লাহ ও তার রাসূলের কাছে সম্মান ও মর্যাদার মাপকাঠি হলো তাকওয়া ও নেক আমল। আল্লাহর কাছে যে সম্মানী মুমিন ব্যক্তিরও তাকে সম্মান করা উচিত। আর আল্লাহর কাছে যার কোনো সম্মান নেই মুমিন ব্যক্তিরও তাকে সম্মান করা উচিত নয়।

ধন-দৗলত, প্রাচুর্য, সামাজিক নেতৃত্ব, বাহ্যিক আকার-আকৃতি ইত্যাদি উত্তম মানুষ হওয়ার মানদণ্ড নয়। এক্ষেত্রে মানুষের দৃষ্টিকোণকে পরিশুদ্ধ করে রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন:

(إِنَّ اللهَ لَا يَنْظُرُ إِلَى صُوَرِكُمْ وَأَمْوَالِكُمْ وَلَكِنْ يَنْظُرُ إِلَى قُلُوْبِكُمْ وَأَعْمَالِكُمْ)

‘ আল্লাহ তা‘আলা তোমাদের আকার-আকৃতি ও ধনসম্পদ দেখেন না। তিনি তোমাদের মনের অবস্থা ও আমল দেখেন’ (মুসলিম)।

এ হাদীস থেকে বুঝা যায় যে, বাহ্যিক আকার-আকৃতি ও ধনসম্পদ উত্তম মানুষের আলমত নয়, বরং উত্তম মানুষের আলামত হলো উত্তম হৃদয় ও উত্তম আমলের অধিকারী হওয়া।

অন্য এক হাদীসে এসেছে :

(قَالَ مُصْعَبِ بْنِ سَعْدٍ رَأَى سَعْدٌ أَنَّ لَهُ فَضْلاً عَلَى مَنْ دُوْنَهُ فَقَالَ النَّبِيُّ: هَلْ تُنْصَرُوْنَ وَتُرْزَقُونَ إِلَّا بِضُعَفَائِكُمْ.)

‘মুসআব ইবনে সা‘দ বলেন: সা‘দ মনে করতেন যে, অন্যদের ওপর তার বিশেষ মর্যদা রয়েছে। এ ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ সা.বললেন: তোমাদের যারা দুর্বল ও অক্ষম তাদের কারণেই তোমরা সাহায্য ও রিযকপ্রাপ্ত হও’ (বুখারী)।

এ হাদীস থেকে বুঝা যায় যে, আর্থিক ও সামাজিকভাবে দুর্বল হওয়া অনুত্তম হওয়ার আলামত নয় বরং এ দুর্বলদের কারণেই সমাজের অন্যান্য লোকেরা আল্লাহর কাছ থেকে রিযক ও সাহায্য পেয়ে থাকে।

অপর এক হাদীসে রাসূূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন:

(لَا تَقُوْلُوْا لِلْمُنَافِقِ سَيِّدْ، فَإِنَّهُ إِنْ يَكُ سَيِّداً أَسْخَطْتُمْ رَبَّكُمْ عَزَّوَجَل)

‘কোনো মুনাফিককে তোমরা নেতা বলে সম্বোধন করবে না কেননা সে নেতা হলেও তোমরা তোমাদের রবকে ক্রোধান্বিত করলে’ (আবু দাউদ, আলবানী হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন)।

এ হাদীস থেকে বোঝা যায়, মুনাফিক ও কপট ব্যক্তিরা যত বড় নেতৃত্বের অধিকারীই হোক না কেন আল্লাহর কাছে তাদের আদৌ কানো মূল্য নেই রবং তাদেরকে নেতা হিসেবে মূল্যায়ন করাটাই হবে আল্লাহকে ক্রোধাম্বিত করার কারণ।

ইবনে হাব্বান তার সহীহ হদীস গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন:

‘একবার রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আবূ যর রাযি. কে বললেন, ‘হে আবূ যর, তুমি কি সম্পদের প্রাচুর্যকে ধনাঢ্যতা বলে মনে করো’? তিনি বললেন, জি হ্যাঁ। এরপর তিনি বললেন, ‘তুমি কি অর্থের অভাবকে দারিদ্র মনে করো’? তিনি বললেন: জি হ্যাঁ। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ‘অর্থের নয় বরং অন্তরের প্রাচুর্য হলো আসল প্রাচুর্য। আর মনের দারিদ্র্য হলো প্রকৃত দারিদ্র্য’। ( আবূ যর বলেন) অতঃপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাল্লাম আমাকে বললেন, ‘অমুককে কি তুমি চেনো?’ আমি বললাম, জি হ্যাঁ। অতঃপর তিনি বললেন, ‘তার ব্যাপারে তোমার ধারণা কী’? আমি বললাম, ‘সে এমন সম্মানিত ব্যক্তি যে, সে কারো কাছে কোনো কিছু চাইলে তাকে তা দেওয়া হয়। সে কারো বাড়িতে প্রবেশ করতে চাইলে তাকে অনুমতি দেওয়া হয়’। এরপর আমাকে তিনি অন্য এক ব্যক্তি সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে তার সম্পর্কে জানতে চাইলেন। আমি তাকে চিনলাম না। অতঃপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাকে তার পরিচয় দিতে লাগলেন। একসময় আমি তাকে চিনতে সক্ষম হলাম। তখন তিনি বললেন, ‘তার ব্যাপারে তোমার মন্তব্য কী?’ আমি বললাম, সে তো আহলে সুফফার একজন গরিব মুসলমান’। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ‘সে পূর্বোক্ত ব্যক্তির চেয়ে হাজার গুণ উত্তম’।

হাদীসে আরো এসেছে:

(عِنْدَ دَفْنِ الشُّهَدَاءِ كَانَ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَسْأَلُ أَيُّهُمْ أَكْثَرُ أَخْذاً لِلْقُرْآنِ فَإِنْ أُشِيْرُ إِلَى أَحَدِهِمَا، قَدَّمَهُ فِيْ اللَّحْدِ)

‘শহীদদেরকে দাফন করার সময় রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জিজ্ঞাসা করতেন যে, এদের মধ্যে কার কুরআন বেশি মুখস্থ? তখন কোনো একজনের দিকে ইঙ্গিত করা হলে তিনি তাকেই কবরে আগে রাখতেন’ (বুখারী)

ইবরাহীম আ. এর ধনসম্পদের প্রাচুর্য ছিল না। তিনি কোনো রাজা-বাদশাহও ছিলেন না। তবে তাঁর ছিল আল্লাহর জন্য একনিষ্ঠতা এবং তাওহীদের মহা প্রাচুর্য, যার কারণে তাঁকে একাই একটি জাতি বলে আল কুরআনে উল্লেখ করা হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে :

{إِنَّ إِبْرَاهِيمَ كَانَ أُمَّةً قَانِتًا لِلَّهِ حَنِيفًا وَلَمْ يَكُ مِنَ الْمُشْرِكِينَ}

‘ ইবরাহীম ছিলেন আল্লাহ তা‘আলার অনুগত একনিষ্ঠ উম্মত। তিনি মুশরিক ছিলেন না’ (সূরা আন-নাহল:১২০)।

এখানে আল্লাহ তা‘আলা ইবরাহীম আ. এর প্রশংসা করতে গিয়ে ধন-সম্পদের কথা বলেননি বরং তার সম্মানের কারণ হিসেবে ঈমান ও আল্লাহর আনুগত্যের কথা বলেছেন।

১.আবদুল্লাহ ইবনে উম্মে মাকতুম রাযি. ছিলেন একজন অন্ধ সাহাবী। তবে তাকওয়া-পরহেযগারিতে ছিলেন অনেক অগ্রসর। তাই রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কখনো মদীনার বাইরে গেলে তাঁকে মদীনার প্রশাসক নিযুক্ত করে যেতেন। সালমান ফারেসী রাযি. অনারব হওয়া সত্ত্বেও পারস্য বিজয়ের পর মাদায়েনের আমীর নিযুক্ত হয়েছিলেন।

২. উমর রাযি. এর খেলাফতকালে তাঁর ছেলে আবদুল্লাহ রাযি. তাঁর কাছে একটি অভিযোগ নিয়ে গেলেন। আব্দুল্লাহ স্বীয় পিতা উমার রাযি.-কে বললেন, ‘হে খলিফাতুল মুসলমীন, আপনি আমার নামে তিন হাজার বরাদ্দ করলেন আর উসামাকে দিলেন চার হাজার। অথচ আমি এমন অনেক যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছি যাতে উসামা অংশগ্রহণ করেনি’। তখন উমর রাযি. বললেন, ‘আমি তাকে তোমার চেয়ে বেশি দিয়েছি, কারণ, সে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে তোমার চেয়ে বেশি প্রিয় ছিল। তা ছাড়া তার পিতাও তোমার পিতার চেয়ে রাসূলের বেশি প্রিয় ছিল। আর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ব্যক্তির মর্যাদা, কুরআন পাঠ, জিহাদ প্রভৃতির নিরিখে প্রত্যেকের হিসসা নির্ধারণ করেছেন’। এরপর যখন বাহরাইনের ভূমিকর আসল তখন উমর রাযি. প্রথম সারির মুহাজিরদের জন্য পাঁচ হাজার করে আর আনসারদের জন্য চার হাজার করে বরাদ্দ করলেন। আর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর স্ত্রীদেরকে বারো হাজার করে দিলেন।

৩. আবদুল্লাহ ইবনে উমর রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হিজরতের আগে মুহাজিরগণ যখন প্রথম ‘আসাবা’য় (কুবা এলাকার একটি জায়গা) আসেন তখন আবূ হুযায়ফার আযাদকৃত গোলাম সালেম রাযি. ইমামতির দায়িত্ব পালন করতেন কেননা তিনি সবার চেয়ে বেশি কুরআন জানতেন। আর হিজরতের পরেও সালেম রাযি. মসজিদে কুবায় প্রথমসারির মুহাজির ও অন্যান্য সাহাবীদের উপস্থিতিতে ইমামতি করতেন। তখন সেখানে আবূ বকর, উমর, আবূ সালামা, যায়েদ, ও আমের ইবনে রাবীয়া রাযিআল্লাহু আনহুমদের মতো সাহাবীগণ ছিলেন।

৪. একবার হারেস ইবনে হিশাম, সুহাইল ইবনে আমর, হুয়াইতিব ইবনে আব্দুল উয্যা প্রমুখ প্রভাবশালী সাহাবী খলীফা উমর রাযি. এর দরবারে যেতে চাইলেন। তখন তাদের সাথে বেলাল ও সুহাইব রূমীসহ কয়েকজন দরিদ্র সাহাবীও ছিলেন। তাঁরা অনুমতি চাইলে তিনি বেলাল ও সুহাইব রাযি. এর সমপর্যায়ের সাহাবীদেরকে অনুমতি দিলেন এবং অন্যদেরকে দিলেন না। তখন আবূ সুফিয়ান রাযি. বললেন, আমি আজকের মতো এমন ঘটনা আর দেখিনি। এই গুলামদেরকে অনুমতি দেয়া হলো আর আমাদেরকে দরজায় বসিয়ে রাখা হলো। এ কথা শুনে সুহাইল ইবনে আমর রাযি. যিনি ছিলেন বুদ্ধিমান, বললেন ‘আমি আপনাদের বিরক্তিভাব বুঝতে পারছি। আপনারা যদি এর জন্য রাগ করে থাকেন তাহলে নিজেদের ওপর রাগ করুন। এটা আপনাদের কর্মের ফল। কেননা তাদেরকে যখন ইসলামের দাওয়াত দেয়া হয়েছিল তখন আপনাদেরকেও ইসলামের দাওয়াত দেয়া হয়েছিল। তারা আগে ভাগে তা গ্রহণ করলেও আপনারা পিছিয়ে ছিলেন। আর আপনারা এরূপ করে যে সম্মান হারিয়েছেন তা এই দরজায় প্রবেশের প্রতিযোগীতায় হেরে যাওয়ার চেয়ে অধিক কঠিন’।

হাসান আল বসরী রহ. বলেন, যে বান্দা আল্লাহ তা‘আলার দিকে দ্রুত এগিয়ে যায় সে বান্দা কখনো তার মতো হয় না, যে ধীর গতিতে অগ্রসর হয়। আল্লাহ তা‘আলা কখনো উভয়ের সাথে একরকম আচরণ করেন না’।

ইসলামের প্রথম যুগে মান-সম্মানের কোরআনী মানদণ্ডের ওপর আমল করার ক্ষেত্রে তারা কিরূপ অটল ও অবিচল ছিলেন উপর্যুক্ত বাস্তব ঘটনাসমূহের মাধ্যমে তা মূর্ত হয়ে ওঠে। আল্লাহ তা‘আলা আমাদেরকেও তাদের মতো আমল করার তাওফীক দান করুন। আমীন।

بَارَكَ اللهُ لِيْ وَلَكُمْ فِي الْقُرْآن الْعَظِيْمِ وَنَفَعَنِيْ وَإِيَّاكُمْ بِمَا فِيْهِ مِنَ الْآياتِ وَالذِّكْر الحْكِيْمِ، أقُوْلُ قَوْلِيْ هَذَا وَأَسْتَغْفِرُ اللهَ لِيْ وَلَكُمْ فَاسْتَغْفِرُوهُ إِنَّهُ هُو الْغَفُور الرَّحِيْمْ .

إِنَّ الْحَمْدَ لِلَّهِ نَحْمَدُهُ وَنَسْتَعِيْنُهُ وَنَسْتَغْفِرُهُ وَنَعُوْذُ بِاللهِ مِنْ شُرُوْرِ أَنْفُسِنَا وَمِنْ سَيِّئَاتِ أَعْمَالِنَا مَنْ يَهْدِهِ اللهُ فَلَا مُضِلَّ لَهُ وَمَنْ يُضْلِلْهُ فَلَا هَادِيَ لَهُ، وأَشْهَدُ أَن لَّا إِلَهَ إِلَّا اللهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيْكَ لَهُ وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّداً عَبْدُهُ وَرَسُوْلُهُ، أَمَّا بَعْدُ :

প্রিয় মুসলিম ভাই ও বন্ধুগণ! মুসলমানদের মধ্যে পারস্পরিক ভ্রাতৃত্ববোধ ও তাদের মধ্যে সহমর্মিতার বিশেষ অনুভূতি আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ হতে এক বিশেষ অনুগ্রহ বটে। আল্লাহ তা‘আলা মুসলিমদের মধ্যে এ আবেগ ও অনুভূতি সৃষ্টি করে দিয়ে তাদের ওপর অনেক করুণা করেছেন। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন:

{وَاعْتَصِمُوا بِحَبْلِ اللَّهِ جَمِيعًا وَلَا تَفَرَّقُوا وَاذْكُرُوا نِعْمَةَ اللَّهِ عَلَيْكُمْ إِذْ كُنْتُمْ أَعْدَاءً فَأَلَّفَ بَيْنَ قُلُوبِكُمْ فَأَصْبَحْتُمْ بِنِعْمَتِهِ إِخْوَانًا وَكُنْتُمْ عَلَى شَفَا حُفْرَةٍ مِنَ النَّارِ فَأَنْقَذَكُمْ مِنْهَا كَذَلِكَ يُبَيِّنُ اللَّهُ لَكُمْ آَيَاتِهِ لَعَلَّكُمْ تَهْتَدُونَ}

‘আর তোমরা সকলে আল্লাহর রজ্জুকে দৃঢ়ভাবে ধারণ কর এবং বিভক্ত হয়ো না। আর তোমরা তোমাদের ওপর আল্লাহর নিয়ামতকে স্মরণ কর, যখন তোমরা পরস্পরে শত্রু ছিলে। তারপর আল্লাহ তোমাদের অন্তরে ভালোবাসার সঞ্চার করেছেন। অতঃপর তাঁর অনুগ্রহে তোমরা ভাই-ভাই হয়ে গেলে। আর তোমরা ছিলে আগুনের গর্তের কিনারায়, অতঃপর তিনি তোমাদেরকে তা থেকে রক্ষা করেছেন। এভাবেই আল্লাহ তোমাদের জন্য তাঁর আয়াতসমূহ বয়ান করেন, যাতে তোমরা হিদায়েত প্রাপ্ত হও’ (সূরা আলে ইমরান: ১০৩)

আল্লাহ তা‘আলা যেহেতু আমাদের মধ্যে ভ্রাতৃত্ব সৃষ্টি করে দিয়েছেন তাই এ ভ্রাতৃত্ব-সম্পর্ক রক্ষা করা আমাদের জন্য আবশ্যক। আর ভ্রাতৃত্বের এ সম্পর্ক কয়েকভাবে রক্ষা করা যেতে পারে।

১. জান-মাল বা কথা দিয়ে হলেও মুসলমানের সাহায্য করা। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন:

{وَإِنِ اسْتَنْصَرُوكُمْ فِي الدِّينِ فَعَلَيْكُمُ النَّصْرُ إِلَّا عَلَى قَوْمٍ بَيْنَكُمْ وَبَيْنَهُمْ مِيثَاقٌ وَاللَّهُ بِمَا تَعْمَلُونَ بَصِيرٌ}

‘ আর যদি তারা দীনের ব্যাপারে তোমাদের নিকট কোন সহযোগিতা চায়, তাহলে সাহায্য করা তোমাদের কর্তব্য। তবে এমন কওমের বিরুদ্ধে নয়, যাদের সাথে তোমাদের একে অপরের চুক্তি রয়েছে এবং তোমরা যে আমল কর, তার ব্যাপারে আল্লাহ পূর্ণ দৃষ্টিমান’ (সূরা আল আনফাল:৭২)

২. মুমিনের সাথে সহমর্মিতার আরেকটি ক্ষেত্র হলো : মুমিনের ব্যথায় ব্যথিত হওয়া এবং তার আনন্দে আনন্দিত হওয়া। হাদীসে এসেছে :

(مَثَلُ الْمُؤْمِنِيْنَ فِيْ تَوَادِّهِمْ وَتَرَاحُمِهِمْ وَتَعَاطُفِهِمْ مَثَلُ الْجَسَدِ، إِذَا اشْتَكَى مِنْهُ عُضْوٌ تَدَاعَى لَهُ سَائِرُ الْجَسَدِ بِالسَّهَرِ وَالْحُمَّى.)

‘ভালোবাসা, স্নেহ-মমতা ও সমমর্মিতার ক্ষেত্রে মুমিনরা একই দেহের মতো। এ দেহের একটি অঙ্গ রোগাক্রান্ত হলে অন্য অঙ্গসমূহ এর জন্য ব্যথিত হয়, জ্বরাক্রান্ত হয়ে পড়ে ও বিনিদ্র রজনী কাটায়’ (মুসলিম)।

৩. মুমিনের সঙ্গে ভালোবাসা প্রকাশের আরো একটি ক্ষেত্র হলো, মুমিনের কল্যাণ কামনা করা। তার সঙ্গে প্রতারণা না করা। রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন :

(لَايُؤْمِنُ احَدُكُمْ حَتَّى يُحِبَّ لِأَخِيْهِ مَا يُحِبُّ لِنَفْسِهِ)

‘ তোমাদের মধ্যে কেউ ঈমানদার হয় না যতক্ষণ না সে তার মুমিন ভাইয়ের জন্য তাই পছন্দ করে যা সে নিজের জন্য পছন্দ করে’ (বুখারী)।

হাদীসে আরো বর্ণিত হয়েছে :

(لَا تَبَاغَضُوا، وَلَا تَدَابَرُوا، وَلَا تَنَافَسُوا، وَكُونُوا عِبَادَ اللَّهِ إِخْوَانًا)

‘তোমরা একে অপরের প্রতি বিদ্বেষ রেখো না একে অপরের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করো না একে অপরের সাথে প্রতিহিংসায় লিপ্ত হয়ো না বরং তোমরা পরস্পরে ভাই ভাই বনে আল্লাহর বান্দা হয়ে যাও’ (মুসলিম)।

৪. মুমিনের সাথে ভালোবাসার সম্পর্ক বজায় রাখার আরো একটি মাধ্যম হলো, মুমিনের সম্মান বজায় রাখা এবং তার দোষ ত্র“টি অনুসন্ধান না করা। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন :

{يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا يَسْخَرْ قَومٌ مِنْ قَوْمٍ عَسَى أَنْ يَكُونُوا خَيْرًا مِنْهُمْ وَلَا نِسَاءٌ مِنْ نِسَاءٍ عَسَى أَنْ يَكُنَّ خَيْرًا مِنْهُنَّ وَلَا تَلْمِزُوا أَنْفُسَكُمْ وَلَا تَنَابَزُوا بِالْأَلْقَابِ بِئْسَ الِاسْمُ الْفُسُوقُ بَعْدَ الْإِيمَانِ وَمَنْ لَمْ يَتُبْ فَأُولَئِكَ هُمُ الظَّالِمُونَ}

‘হে ঈমানদারগণ, কোনো সম্প্রদায় যেন অপর কোনো সম্প্রদায়কে বিদ্রুপ না করে, হতে পারে তারা বিদ্রুপকারীদের চেয়ে উত্তম। আর কোনো নারীও যেন অন্য নারীকে বিদ্রুপ না করে, হতে পারে তারা বিদ্রুপকারীদের চেয়ে উত্তম। আর তোমরা একে অপরের নিন্দা করো না এবং তোমরা একে অপরকে মন্দ উপনামে ডেকো না। ঈমানের পর মন্দ নাম কতইনা নিকৃষ্ট! আর যারা তাওবা করে না, তারাই তো যালিম’ (সূরা আল হুজুরাত:১১)

৫.মুমিনের সাথে ভালোবাসা প্রকাশের আরো একটি মাধ্যম হলো, মুমিনের সাথে সৌজন্য সাক্ষাত করা। এ প্রসঙ্গে হাদীসে কুদসিতে আছে :

(وَجَبَتْ مَحَبَّتِي لِلْمُتَحَابِّينَ فِيَّ، وَالْمُتَجَالِسِينَ فِيَّ، وَالْمُتَزَاوِرِينَ فِيَّ، وَالْمُتَبَاذِلِينَ فِيَّ)

‘যারা আমার জন্য পরস্পরকে ভালোবাসে, আমার জন্য একে অন্যের সাথে বসে, আমার জন্য পরস্পরে সাক্ষাত করে এবং আমার জন্য একে অন্যের উদ্দেশ্যে ব্যয় করে তাদের জন্য আমার ভালোবাসা অবধারিত’ (আহমদ, সহীহ)।

৬. মুমিনের সাথে ভালোবাসা প্রকাশের আরো একটি মাধ্যম হলো, মুমিনের অধিকারের প্রতি সচেতন থাকা। আর মুমিনের অধিকারের মধ্যে একটি অধিকার হলো কোনো মুসলমান কোনো কিছু কিনতে চাইলে বা কোনো চুক্তিতে আবদ্ধ হতে চাইলে অন্য কেউ তাতে দখল না দেয়া।

৭. মুমিনদের জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করাও মুমিনদের প্রতি ভালোবাসা প্রকাশের একটি মাধ্যম। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন :

{وَاسْتَغْفِرْ لِذَنْبِكَ وَلِلْمُؤْمِنِينَ وَالْمُؤْمِنَاتِ}

‘তুমি ক্ষমা চাও তোমার ও মুমিন নারী-পুরুষদের ত্রুটি-বিচ্যুতির জন্য’ (সূরা মুহাম্মাদ:১৯)

কাফিরদের সাথে কোনো রকম সাদৃশ্য অবলম্বন করা যাবে না

মুহতারাম হাযেরীন! মুমিনদের সাথে যেমন ভালোবাসা রাখতে হবে তেমনি কাফেরদের থেকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। মুমিনের জন্য তাদের সাদৃশ্য অবলম্বন করা কখনো উচিত হবে না। আমাদের প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ ব্যাপারে বিস্তারিত নির্দেশনা দিয়েছেন। ইবাদত-বন্দেগী, মুআমালাত-মুআশারাত, আচার আচরণসহ সকল ক্ষেত্রে তাদের সাদৃশ্য অবলম্বন না করে স্বাতান্ত্র্য বজায় রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। হাদীসে

خَالِفُوْا الْمُشْرِكِيْنَ

‘মুশরিকদের ব্যতিক্রম করো,

خَالِفُوْا الْمَجُوْسَ

অগ্নিপূজকদের ব্যতিক্রম করো,

خَالَفُوُا الْيَهُوْدُ

‘ইহুদিদের ব্যতিক্রম করো

خَالِفُوْا أَهْلَ الْكِتَابِ

আহলে কিতাবদের ব্যতিক্রম করো

وَمَنْ تَشَبَّهَ بِقَوْمٍ فَهُوَ مِنْهُمْ

‘ আর যে ব্যক্তি কোনো সম্প্রদায়ের সাদৃশ্য অবলম্বন করল সে তাদের মধ্যে গণ্য হলো’। এ জাতীয় নির্দেশনা বারবার এসেছে।

আল্লাহ তা‘আলা বলেন :

{لَا تَجِدُ قَوْمًا يُؤْمِنُونَ بِاللهِ وَالْيَوْمِ الْآَخِرِ يُوَادُّونَ مَنْ حَادَّ اللَّهَ وَرَسُولَهُ}

‘যারা আল্লাহ ও পরকালের প্রতি ঈমান আনে তুমি পাবে না এমন জাতিকে এমন লোকদের সাথে বন্ধুত্ব করতে, যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের বিরোধীতা করে’ (সূরা আল মুজাদালা:২২)

ঈমানের মজবুত রজ্জু

মানুষ সামাজিক জীব। সমাজবদ্ধভাবে মানুষের বসবাস। সামাজিক জীবনে মানুষকে কারো না কারো সাথে মহব্বত ও ভালোবাসার সম্পর্ক রাখতে হয়। দীন ও দুনিয়া উভয় প্রয়োজনেই মানুষকে এরূপ করতে হয়। আর এক্ষেত্রে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদেরকে দিয়েছেন সর্বোত্তম মানদণ্ড। তিনি বলেছেন :

(أَنْ يُحِبَّ الْمَرْءَ لَا يُحِبُّهُ إِلَّا لِلَّهِ)

‘কাউকে ভালোবাসলে, অন্য কোনো উদ্দেশ্যে নয়,বরং একমাত্র আল্লাহর জন্যই তাকে ভালোবাসা’ (মুসলিম)।

আল্লাহ তা‘আলা আমাদেরকে মানুষ চেনার সঠিক মানদণ্ড বোঝা ও তা বাস্তবায়ন করার তাওফীক দান করুন।

إِنَّ اللَّهَ وَمَلَائِكَتَهُ يُصَلُّونَ عَلَى النَّبِيِّ يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آَمَنُوا صَلُّوا عَلَيْهِ وَسَلِّمُوا تَسْلِيمًا. اللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى عَبْدِكَ وَرَسُوْلِكَ نَبِيِّنَا مُحَمَّدٍ، وَارْضَ اللَّهُمَّ عَنِ خُلَفَائِهِ الرَّاشِدِيْنَ أَبِيْ بَكْرٍ وَعُمَرَ وَعُثْمَانَ وَعَلِيٍّ وَعَنْ الْصَّحَابَةِ أَجْمَعِيْنَ - رَضِيَ اللهُ عَنْهُمْ وَرَضُوْا عَنْهُ- وَالتَّابِعِيْنَ لَهُمْ بِأحْسَانٍ إِلَى يَوْمِ الدِّيْنِ، وَعَنَّا مَعَهُمْ يَا أَرْحَمَ الرَّاحِمِيْنَ.

হে আল্লাহ আপনি আমাদেরকে কুরআন-সুন্নাহর মানদণ্ডে উত্তম মানুষ বনার তাওফীক দান করুন। যারা মুমিন, মুত্তাকী, দুনিয়াত্যাগী তাদেরকে যথার্থরূপে মূল্যায়ন করার তাওফীক দান করুন। হে আল্লাহ! যারা মর্যাদা পাওয়ার উপযোগী নয তাদেরকে যাতে মর্যাদা না দেই সে তাওফীক আমাদের নসীব করুন। আপনি আমাদের সকল গুনাহ-খাতা মাফ করে দিন। আমাদের জন্য জান্নাতের ফয়সালা করুন। আমীন, ইয়া রাব্বাল আলামীন।

عبَادَ اللهِ رَحمِكُمُ الله : (إِنَّ اللهَ يَأْمُرُ بِالْعَدْلِ والإحْسَانِ وَإيْتَاءِ ذِي الْقُرْبَى وَيَنْهَى عَنِ الْفَحْشَاءِ وَالمْنْكَرِ وَالْبَغْيِ يَعِظُكُمْ لَعَلَّكُمْ تَذَكَّرُوْنِ) اُذْكُرُوا اللهَ يَذْكُرْكُمْ وَادْعُوْهُ يَسْتجِبْ لَكُمْ وَلَذِكْرُ اللهِ تَعَالَى أَعْلَى وَأَعْظَمُ وَأَكْبَرُ.